সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চন্দ্রাহত শহর! এমনি চাঁদ নয়, ‘ব্লাড মুন’। অর্থাৎ কিনা গাঢ় লাল চাঁদ দেখা গেল শহরের আকাশে। দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। তার আগে মহাজাগতিক উৎসবে মেতে উঠল বাঙালি! আর কুসংস্কার মুক্ত চন্দ্রদর্শনে বড় ভূমিকা নিল পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। ‘বিশ্বাসে নয়, যুক্তিতর্কেই মুক্তি’, ‘চোখ’ রাখুন আকাশে, ‘মন’ চলুক যুক্তিতে। চন্দ্রগ্রহণ কোনও ‘রাহু-কেতু’র অলৌকিক কেরামতি নয়। বরং একটি মহাজাগতিক বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া—পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কণ্ঠে কণ্ঠ এই ঘোষণা দিল তিলোত্তমা শহর।
পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ বা ‘ব্লাড মুন’ বা ‘কপার মুন’ খালি চোখে রবিবার ৭ সেপ্টেম্বর ৮.৫৮ মিনিট থেকে দেখা গিয়েছে কলকাতার আকাশে। বাঘাযতীনের রায়পুর গার্লস হাইস্কুলের ছাদে আই.পিসে, কাঠ গোলার মাঠে (সিথি সাউথ), কসবা, তিলজলা, পার্কসার্কাস, আনোয়ার শাহ রোড, ঢাকুরিয়া, বেহালা, গোবরাতে শিবির করে কুসংস্কারের বাধানিষেধ ভেঙ্গে শত শত মানুষ আকাশে চোখ রাখলেন এদিন। যার সিংহভাগ ছাত্র-ছাত্রী। চন্দ্রদর্শনর এই আয়োজন করেছিল পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ, কলকাতা জেলা প্রশাসন, একাধিক স্কুল এবং ক্লাব কতৃপক্ষ।
অনেকের ধারণা, চন্দ্রগ্রহণের সময় খাবার খাওয়া যায় না। এমনকী জল খাওয়া ঠিক না। যেহেতু রাহু-কেতুর গ্রাস ইত্যদি। কেউ কেউ গ্রহণের পর স্নান করার নিদান দেন। যদিও এই সব ভাবনাকে তুড়ি মেরে ওড়াল পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উদ্যোগ। ফলে চাঁদ ধেকার সঙ্গেই চলল চা-বিস্কুট-মুড়িমাখা, এমনকী রাতের ডিনারও। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে যুক্তিবাদ, বিজ্ঞানমনস্কতা প্রসার ও বিজ্ঞান চেতনা গঠনে ধারাবাহিক কাজ করে চলেছে। চন্দ্রগ্রহণে গঙ্গা স্নান করার দরকার নেই, রান্না খাবারে বিষক্রিয়া হয় না, খাবার ফেলে দিতে হবে না। এগুলি প্রচলিত কুসংস্কার। পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের মধ্যে খাবার খেয়ে এবং লিফলেট বিলি করে প্রচার চালাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ।