কান্তদিঘি কুমারপাড়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন

কান্তদিঘি কুমারপাড়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন

শিক্ষা
Spread the love


 

  • কৌশিক দাস

গরুমারা জাতীয় উদ্যান লাগোয়া নেওড়া গ্রাম, নেওড়া নদী চা বাগান, বাঁশবাড়ি, হাজার ৬৪-র মতো প্রান্তিক গ্রামের ছেলেমেয়েদের প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর পর উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হতে দেখে এলাকায় হাইস্কুল স্থাপনের প্রয়োজন বোধ করেন শিক্ষানুরাগীরা।

প্রয়াত শচীন্দ্রনাথ রায়, প্রয়াত নগেন্দ্রনাথ রায় প্রমুখ কয়েকজন মিলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কমিটি গঠন করে প্রথমে পার্শ্ববর্তী প্রাইমারি স্কুলের একটি ঘর এবং ৭ জন পড়ুয়াকে নিয়ে শুরু হয়েছিল পথ চলা।

এরপর প্রয়াত অঘনেশ্বরী রায়ের দান করা জমিতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। বিদ্যালয় গড়তে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বহু স্থানীয়।

১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮৪ সালের ২ জানুয়ারি সরকারি অনুমোদন মেলে। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক হিসেবে দোলনচাঁদ গঙ্গোপাধ্যায় যোগদান করেন। এরপর ২০০৯ সালে মাধ্যমিক এবং ২০১৫-তে উচ্চমাধ্যমিকে উন্নীত হয় প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে পড়ুয়া সংখ্যা ৬০০। ৫০ বছর আগে যে বীজ বপন করা হয়েছিল, তা আজ মহীরুহে পরিণত।

২০ থেকে ২২ জানুয়ারি, তিনদিনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে। প্রথম দিন জাতীয় পতাকা এবং সুবর্ণ জয়ন্তীর পতাকা উত্তোলন করা হয়। তারপর প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন অতিথিরা।

প্রথম দিন রবীন্দ্রসংগীত এবং নজরুলগীতি পরিবেশন করে পড়ুয়ারা। স্কুলের শিক্ষিকাদের পরিবেশিত শ্রুতিনাটক ছিল অন্যতম আকর্ষণ। দ্বিতীয় দিনের সূচিতে ছিল, বহিরাগত শিল্পীদের বিহু ও ভাওয়াইয়া নৃত্য। শেষ দিনেও জমজমাট অনুষ্ঠান হয়েছে।

প্রশংসিত হয়েছে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মিহির রায়ের ‘সঞ্চয়নী’ কবিতা পাঠ। কমলেশ ওরাওঁয়ের ‘অমল ও দইওয়ালা’ পাঠ মন জয় করে নেয় সকলের। নজর কেড়েছে পড়ুয়া ঊষশ্রী সাহার রবীন্দ্রসংগীত এবং ‘উঠান ভরা আলপনা’ গানে একদল ছাত্রীর পরিবেশিত লোকনৃত্য।

অনুষ্ঠানে এসে প্রাক্তনী মঙ্গল ওরাওঁ নিজের স্কুল জীবনের কথা বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়ছিলেন বারবার। আরেক প্রাক্তনী অপু রায় দীর্ঘদিন বাদে বিদ্যালয়ে এসে পুরোনো শিক্ষক-শিক্ষিকার দেখা পেয়ে ভীষণ খুশি।

তবে এত আনন্দের মাঝেও আক্ষেপের সুর ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক কৃষ্ণা ছেত্রীর গলায়। বলছিলেন, ‘এই পঞ্চাশ বছরে সুসজ্জিত ক্লাসরুম, লাইব্রেরি ইত্যাদি সব হয়েছে। কিন্তু দিনের পর দিন পড়ুয়া সংখ্যা কমে যাওয়ায় চিন্তা বাড়ছে। করোনাকালে ফার্স্ট জেনারেশন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পড়াশোনার যে গ্যাপ তৈরি হয়েছে, তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে গ্রামে। অষ্টম পাশের পরই ছেলেদের মধ্যে বাইরে কাজে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। তবে কন্যাশ্রী এবং অন্যান্য সুযোগসুবিধার সৌজন্যে ছাত্রীরা স্কুলমুখী।’ এসবের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষকের অভাবও বিদ্যালয়ের অন্যতম সমস্যা বলে স্বীকার করলেন তিনি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *