সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সরকারি প্রকল্পে কাজের বরাতে মুসলিম ঠিকাদারদের জন্য ৪ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত কর্নাটক সরকারের। গত শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি বিধানসভা অধিবেশনেই পেশ হতে চলেছে এই বিল। কংগ্রেস সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক চরম আকার নিয়েছে। ‘রাহুল গান্ধীর পরামর্শে তুষ্টিকরণের রাজনীতি’ চলছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
মুসলিম ইস্যুতে কর্নাটকে কংগ্রেস ও বিজেপির অবস্থান সম্পূর্ণ উলটো মেরুতে। বিজেপি শাসনে কর্নাটকে সরকারি বরাতে মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণ তুলে দেওয়া হয়। পালটা কংগ্রেস জানায়, ক্ষমতায় এলে ফের সংরক্ষণ ফিরিয়ে আনা হবে। ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। এর পরই সংখ্যালঘুদের মনজয়ে উঠেপড়ে লাগে সরকার। গত ৭ মার্চ শুক্রবার কর্নাটক বিধানসভায় বাজেট পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। সেই বাজেটে সংখ্যালঘুদের জন্য দেদার ঘোষণা করা হয়। স্রেফ সংখ্যালঘু উন্নয়ন খাতে ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেন সিদ্দা। এর মধ্যে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ শুধু ওয়াকফ সম্পত্তি সংরক্ষণে। যে ওয়াকফ আইন বদলে ফেলতে উদ্যত হয়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকার, সেই ওয়াকফ বোর্ডকেই বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করেছেন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী।
এর বাইরে রাজ্যের উর্দু স্কুলগুলির জন্য বরাদ্দ করা হয় ১০০ কোটি টাকা। এবং সব রেজিস্টার্ড ইমামদের জন্য মাসিক ৬০০০ টাকা করে ভাতাও ঘোষণা করা হয় কর্নাটকের বাজেটে। এরপর মুসলিমদের দাবি মেনে সরকারি টেন্ডার বা বরাতে মুসলিমদের জন্য ৪ শতাংশ সংরক্ষণ ঘোষণা করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার এই সিদ্ধান্তেই শিলমোহর দিল সিদ্দা সরকার। জানানো হয়েছে, এক কোটি টাকা পর্যন্ত সরকারি বরাতে ৪ শতাংশ সংরক্ষণ পাবেন মুসলিম ঠিকাদারেরা। এই সিদ্ধান্তের পালটা কংগ্রেসকে কড়া সুরে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠক বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ বলেন, “আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি রাহুল গান্ধীর পরামর্শেই কর্নাটকে মুসলিমদের জন্য এই ৪ শতাংশ সংরক্ষণ এনেছে কংগ্রেস সরকার। এটা শুধু কর্নাটকের জন্য নয়, রাহুল গান্ধীর মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রকল্প দেশের বাকি কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতেও লাগু হবে।” পাশাপাশি এই সিদ্ধান্তকে ‘ধর্মান্তকরণে উৎসাহ’ দানের পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘এই সরকার ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য ক্ষমতা, জনসাধারণের অর্থের অপব্যবহার করছে। রাজ্যের অর্থনীতিকে রাজনৈতিক সুবিধাবাদীদের খেলার মাঠে পরিণত করেছে।’ চরম বিতর্কের মাঝে সিদ্দারামাইয়ার দাবি, ‘এই সংরক্ষণ ধর্মের ভিত্তিতে নয়, রাজ্যের পিছিয়ে পড়া মানুষকে সরকারি কাজের বরাতের সুযোগ দিতেই এই পদক্ষেপ। অনুন্নত শ্রেণির তালিকাভুক্ত মুসলিম সম্প্রদায় এই সুবিধা পাবে।’