কবিতা – Uttarbanga Sambad

কবিতা – Uttarbanga Sambad

খেলাধুলা/SPORTS
Spread the love


কেয়ার অফ চন্দনগাছ

মনোনীতা চক্রবর্তী 

 

চারপাশে অথই কোলাহল

দর্শক সরব, নয়ের ঘরের নামতা আওড়াতে

সব কেমন জড়িয়ে যাচ্ছে!

মনস্কতা গোড়ালি বেয়ে জড়িয়ে-পেঁচিয়ে অজস্র সাপ;

শাপের উর্বরতা রাখতে চাইছে, আবার উধাও হচ্ছে।

 

আবারও মুখোমুখি ছায়াশরীর;

 

একবার ধিক্কার, আরেকবার অট্টহাসি রেখে হারিয়ে যাচ্ছে।

এত দূষণের ভিতর নির্বিকার দাঁড়িয়ে চন্দনগাছ একলা

ভিড়ে মিশতে মিশতেও না – মিশে যেন ছিটকে বেরিয়ে আসছে কেউ অসংযত প্রলাপ ছিঁড়ে।

রক্তমাংসের অক্ষর সতীর খণ্ড দেহ যেন!

সাপের ফণা ঘন বিষ তুলছে। নীরব হচ্ছে বহুস্বর।

ঠায় দাঁড়িয়ে আছে পাতাঝরার পরেও

একলা গাছ…

সব চন্দনগাছের গন্ধ এক নয়

 

শীতার্ত শরীর
স্বপন মজুমদার

 

আমার পৃথিবী যেন দুরারোগ্য ব্যাধির প্রকোপে

মৃত্যুর মুখোমুখি ঝাপসা দৃষ্টি নিয়ে
বসে আছে অনন্যোপায় জীর্ণ দাওয়ায়
প্রবল ঘূর্ণিপাকে মানবিক মুখগুলো
দিশাহারা অসহায় মনে হয় রুদ্ধ কারাগারে।

এখানে উর্বর মাটি বন্ধ্যা হয়ে যায় রাতারাতি,

জলাভূমি শুধু নয় তীর তীর বয়ে যাওয়া
অসংখ্য আস্ত নদীও পারিপার্শ্বিকতার
বিচিত্র আবহে শুকনো কাঠের মতো
পড়ে থাকে বালিময় চরের আশ্রয়ে।
আশ্চর্য সুখী মানুষেরা হারিয়েছে দৃশ্যমানতা।
কোন পথে যাবে বলো হাভাতে মানুষ—
সংকীর্ণ পরিসর ঘিরে রাখে স্বচ্ছ যাপন।
মায়ের আঁচলে শুধু শোক জমে হিমের মতন—
কবে যে ডানা মেলে উড়ে আসবে ভোরের পাখিরা
অস্থির আগুন সেঁকে শীতার্ত শরীর।

 

শোককে পড়াই সেই পাঠ

চিরঞ্জিত ভাণ্ডারী

 

প্রতিবাদ পুড়তে পুড়তে যে অবশিষ্ট নাভিকুণ্ড

তাও নিয়ে গেছে কাক।

আমি সেই সব ছুঁয়ে

কলমের কালিটা সম্পূর্ণ নিংড়ে ফেলি জলে

আর কলমে ভরেছি অদ্ভুত এক রং

যা দিয়ে লিখে দুঃখ আড়ালের দিনলিপি।

সবাই যখন ক্ষতদাগ লুকিয়ে বাঁশি বাজায়

সেখানে মশাল জ্বালানোটা এক পাগলামি।

বাঁচতে চাওয়ার মতো সুন্দর পূর্ণিমার চাঁদও নয়

এই মরশুমে বরং শোককে পড়াই সেই পাঠ

যে পাঠে সে-ও সুখী হতে পারে।

 

মুচলেকা

শিপ্রা বিষ্ণু 

 

হৃদয়ে মুচলেকা দিয়ে শূন্যতা ভরে

দিতে লিখে ফেলি সবুজ ঘাস

অনেক ক্ষত বিক্ষতের মধ্যে যারা ডুবে আছে

তাদের জন্য বিছিয়ে রেখো স্বপ্ন

জন্মেই যারা রক্ত নদীতে ভাসে

তাদের হাতের তালুতে তুলে এনে বিদ্যুৎ

যে মেঘের পাশে হেঁটে আসে

তাদের বলে দিও খামারের পথ

ব্যর্থতার চোরাবালিতে যে রেখেছে পা

তাকে দিও উজ্জ্বল পৃথিবীর সম্ভাবনাময় ঠিকানা।

 

শেষ পাতায়

সুদীপা দেব

 

আজ আর কোনও সংশয় রাখিনি

বিলাওল রাগের অনুরণন নেই আমার

সমস্ত অভিমান ক্ষত স্বচ্ছ পাহাড়ি জলের মতো ভাসিয়ে দিয়েছি

পুণ্যতোয়া কোনও নদীর গভীর বুকে।

আনন্দী পূর্ণিমার চাঁদ আলোয় বসে

বিশুদ্ধ কবিতার মতো নির্মল সাদা ফুল

রাখলাম আমার দুই চোখে।

এ অরণ্য জানে, মেঘ জানে

গাছের পাতায় লেখা সূর্যের চিঠি জানে

এত আনন্দ মুখর সমাগম মাঝে

প্রেমময় প্রতিলিপির পাতা আজ রংতুলিহীন

শুধু ছায়া ছায়া ফাল্গুন।

বিগত শ্রাবণ থই থই এ নিশীথ বুকে

আজ আর কোনও সংশয় নেই

ভরসার হাত শূন্য করে

আমি নির্ভার হব ঋষিকার বৈদিক মন্ত্রে।

 

অনসূয়া

অলি আচার্য 

 

এখন আমার অসুখ নেই আর।

রৌদ্রজানলার সঙ্গে সহজমিতা আরবার।

কুচকাওয়াজ বিবমিষা সম,

কদাচ শব্দশিহরন,

ভাঙাচোরা স্মৃতির পোস্ট মর্টেমে

অহর্নিশ প্লুতস্বরের দোহন।

ক্লান্ত বিকেল, নোনতা-চা,

দৈবাৎ কফিমাগে ঘাড় গুঁজে কাজ অফুরান;

ঘুমন্ত আঙুল ছুঁয়ে শ্বাসশব্দ শুনিনি বহুকাল।

 

শূন্য মন্দির মোর

প্রলয় মণ্ডল

 

আমি জীবন্ত সিসিফাস

তোমার অভিমানের পাহাড় সরিয়ে যাব

আমার মথুরা নেই

যমুনার জলে ভেজা তোমার খোলা চুল

শেষ আশ্রয়

তোমায় নিয়ে কোনও পদাবলি লেখা হল না।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *