১
মন্থর দুপুরের ছায়া
স্নেহাংশু বিকাশ দাস
নিজের ভেতরেই নিজেকে আরও বেশি খুঁজতে শুরু করি
নতুন একটা সীমান্ত দেখতে পাওয়া যায়
মেরুদণ্ড বরাবর চাপা কান্নাগুলো পুড়ছে
তখনও তুমি শীতের বাতাসের কাছে রোদ্দুর জমাচ্ছ
গাছে গাছে লিখে রাখছ গোপন অভিসন্ধিগুলো
দেখো পলাশের রং-এ ফিরে আসছে তোমার কৈশোর
এখন আর চড়াই উতরাই পেরোনো কঠিন হবে না
এদিকে ওদিকে ছড়িয়ে পড়েছে দুপুরের মন্থরতা
তুমি তাকে চেনাবে শবানুগমনের রাস্তা
সে শোনাবে বাউলের একতারার সুর
বিষাদ বেজেছে ধুলোর ভেতর, তারও ছায়া পড়ে চোখে…
২
তৃতীয় পাণ্ডব সমীপেষু
পরাগ মিত্র
হে কৌন্তেয়, খাণ্ডবদাহন শেষে লোডেড ট্রাকে
নামালে যে মাটিতে, সেখানে সোঁদা গন্ধ নেই
শিহরন নেই সায়াহ্নের মর্মরে, শোণিতে দ্রিমি দ্রিমি
উচাটন ভুলে জুড়াইতে চাই জুড়াই কোথায়?
কাট। ফ্ল্যাশব্যাক। ফার্স্ট গিয়ারে পে-লোডার
খনির গহিনে অপলক ইনস্যাস ছায়া নড়ে না
বিমোহিত ইন্ডিয়ায় পন্থের কার্টহুইল পদ্য ঠেলে
অনিমেষ বেওসা চালায়
ঝুমরি চেনে শুধু বনজ স্বেদের ঘ্রাণ কালো দেহ
আঁকড়ে কাঁপে কেউটের আক্রোশে, থরথর
মহুলবন নিগূঢ় প্রহরে, ঝলমলে রাতে
জমে ব্যর্থ অভিসার, কোথায় লুকাই বল একান্ত দহন
হে আর্য জানি শিখিয়ে দেবে পাস্ট ইজ
অলওয়েজ নট পারফেক্ট করতল জুড়ে জল
জঙ্গলের শব শরীরাণি বিহায় ছেয়ে ঘুমে
জাগরণে, চিলতে আঁধার নেই জুড়াই কোথায়
৩
কথা কি শোনে হাওয়া
সুরভি চট্টোপাধ্যায়
মাঠ পেরিয়ে শব্দ ঝরা হাওয়া
ভোর রাতের অবাধ্য প্রেমিক যেন…
সবে শীতল দাগে শরীর…
জন্মজীবনের লক্ষ্য
কথা তখনও…
কথা কি শোনে হাওয়া?
মেঘের বালিশ স্বপ্ন আনে কখনো?
রাত্রি কালেও ভিটেয় ছিল শ্বাস
আজকে উজাড় জানো…
আমিও তাকে ডাকি
ডেকেছিলাম রাতে
মুচকি হেসে বলল সে যে
পালের বলদ বৃদ্ধ হলে
শীত জমে যে তাতে…
৪
বিরূপকাল
অদীপ ঘোষ
পাব্লিকের ঘুমগুলো দিব্যি পকেটস্থ করে রাজনীতি আরামে ঘুমোয়
ঘুমের ভেতর তারা লালকেল্লা ঘুরে ঘুরে দেখে
কখনো বা ময়দানে নায়িকার হাত ধরে ওড়ে
উড়তে উড়তে প্রেম ভাগীরথী পথ বেয়ে সমুদ্দুরে মেশে
ফলত যুবকবৃন্দ ভাঁড়ে মা ভবানী হাতে রাতে ঘরে ফেরে
এবং যুবতীগণ অবিরাম দীর্ঘশ্বাসে কার্বনের পাঁচিল বানায়
বিকেলের হাত ছেড়ে সন্ধে ঢোকে ধর্মের আড়তে
উদ্বাহু ভক্তির চোটে যাবতীয় অপকর্ম পুণ্য হয়ে ওঠে
সেই পুণ্য পৌঁছে যায় অবিরাম ভাষণে পোস্টারে
উত্তরের জোলো হাওয়া গায়ে মেখে জনগণ
ভয় ও লোভের অতি উপাদেয় খিচুড়ি সাঁটায়
৫
অন্তরবীণা
পাপিয়া মিত্র
শৈশব গান গেয়ে যায়
বৃষ্টি ভেজা বাগানে
ফুলের সাজি হাতে প্রতিদিন
একটু একটু করে স্পষ্ট হয় অতীত।
দিঘির গভীর থেকে উঠে আসে সেই মুখ
হঠাৎ চিৎকার—‘অবনী বাড়ি আছ?’
প্রবাহের অন্তরবীণা
মাটির ছায়ায় বিশ্বাসের কথা কয়
শব্দহীন মানুষ এবার তুমি
ভালোবাসার আলাপ শুরু করো।
সেই তো কবেকার রাত–
ছায়ামেখে দাঁড়ায় ঢ্যাঙা গাছটার মাথায়
সেই চোখ আকুলতা নিয়ে চেয়েছিল
ফুটপাথের শরীর দুটো মিশে থাক।
তবুও কৈশোর গান গায়
তারুণ্যের উত্তাপে প্রবাহ গতি পায়
বাক্যহীন কণ্ঠ এবার তুমি
ভালোবাসার আলাপ শুরু করো।
The submit কবিতা appeared first on Uttarbanga Sambad.