কবিতাগুচ্ছ – Uttarbanga Sambad

কবিতাগুচ্ছ – Uttarbanga Sambad

শিক্ষা
Spread the love


 আলাস্কা মাদাগাস্কার সলসলাবাড়ি

  • বিজয় দে

 

 আমি আলাস্কার লোক

আলাস্কায় আর থাকা যাচ্ছে না; ফেরার কথা ভাবছি। কিন্তু কথা হচ্ছে,

তাহলে সব কিছু গুটিয়ে এখন আমরা কোথায় যাব? এদিকে মুড়ির মোয়া

তৈরির ব্যবসা এখন খুবই অনিশ্চিত, পড়তির দিকে। তাহলে অনেকদিনের

এই ব্যবসা ছেড়ে এই পৃথিবীতে এখন আমরা কী করব?

 

সারাদিন দুয়ে দুয়ে মাত্র এই কয়েক লাইন; অন্য কিছু

আর মাথায় আসছে না

 

আলাস্কায় আনন্দে পাতা আমাদের সাধের ঘর–সংসার; এইটুকু

বাদ দিলে তাহলে আমার আর কি কোনও লেখা নেই?

 

আলাস্কার প্রতি আমার প্রশ্ন, ফুল ফুল নীলকান্ত মুড়ির মোয়া কি

আলাস্কার জনগণ আর খাবে না?

 

স্বপ্ন দিয়ে স্বপ্নকে গুণ করি প্রবল; আলাস্কার জয় হোক

থাকি বা না-থাকি, আমি কিন্তু শেষপর্যন্ত আলাস্কারই লোক

 

 

যার যার মাদাগাস্কার

আলাস্কায় যদি না থাকতে পারি, তাহলে মাদাগাস্কারে যাব

আমার নিজের দেশ কোথায়?

 

সলসলাবাড়ির বন্ধুদের বলেছি, ‘একটু খোঁজখবর নাও

কী ব্যবসা করা যায়, তোমরা মাদাগাস্কারে গিয়ে কি

চাঁদ-পোড়া খাও?’

 

আমিও ঠিক করেছি, আসন্ন আশ্বিনের শারদপ্রাতে

মাদাগাস্কারে পৌঁছেই বলব

‘যতক্ষণ প্রাণ, বেঁচে থাকব শুধু দুধে আর ভাতে’

 

যে জানে সে জানে, মাদাগাস্কারে নিশ্চিত একদিন

আমাদের একটি নিজস্ব বাড়ি হবে

আর আজ সেই বাড়িটির নাম দিলাম দ্বিতীয় নোবেল পুরস্কার

 

অলিগলি শহরতলি

সলসলাবাড়ির কথা যখন উঠল, তখন নিশ্চিন্তে বলি

‘আমার লেখা যেন পুরোনো পৃথিবীর নিঝুম শহরতলি’

 

ঘুম-চোখে যত দূর দেখা যায় সেটাই আমার পাড়া

বয়স-জব্দ শরীর তবু মনের দু’পা ছুপা লক্ষ্মীছাড়া

 

বনবাদাড়ে হুহু করে হৃদয়; যত পদ্য এক জীবনে শেখা

পথ পেরোলে আলাস্কা; কাঁটাঝোপে মাদাগাস্কার লেখা

 

চাঁপাফুলের স্বপ্ন

আমার একটি স্বপ্ন হলুদ বরফের দুর্গা প্রতিমা

স্থাপন স্থাপন আপন আপন

হরফ গলে গলে ঝর্ণা মহামায়া

 

আমার একটি স্বপ্ন জীবনচন্দ্র যাপন

গোপন গোপন বপন বপন

বন্দে মাতরমে আজও লিখি কাঁঠালচাঁপার ছায়া

 

কাঁঠালচাঁপার গন্ধে কোনও সন্দেহ নেই

এই গাছ যেন ছদ্মবেশী স্বদেশি

সব মন্ত্র স্বাধীনতা চাঁপাফুলের মাংসপেশি

 

শেষ প্রণয়

আলাস্কায় বার্ষিকী কবিতা পাঠের আসর

যেমন হয়; মাদাগাস্কারে প্রচুর হাততালি

 

সলসলাবাড়িতে অপেক্ষায় তিনজন

একজন কবির নাম ছিল সালভাদোর দালি

 

মানচিত্র ঘুরে ঘুরে আমি দেখি দ্রাঘিমারেখা

বিষুবরেখার এপার-ওপার রক্তজবা কতটা হৃদয়

 

রক্তপাতে কতটা জন্মভূমি; আমিই কি তবে শেষ

কবিতার যতটুকু প্রণয়

 

লাবণ্য, প্রিয় লাবণ্য

লাবণ্যর জন্মদিনে আমরা সবাই সেবার একসাথে ছিলাম

দেশে ও বিদেশে জনে জনে হাতচিঠি

শুভেচ্ছা জানাও শুভেচ্ছা পাঠাও

 

লাবণ্যর জন্মদিন মানে আমরা একটি গভীর শুক্রবার

হাঁটতে হাঁটতে পেরিয়ে গেলাম

 

শ্রাবণ মাসে আকাশে যদি মেঘ থাকে তবে পত্র লেখো

‘লাবণ্য আমি এখন আলাস্কায় লাবণ্য আমি এখন মাদাগাস্কারে

শুনেছ কি সলসলাবাড়িতে তোমার জন্মদিন পালিত হয়েছে

 

লাবণ্য, প্রিয় লাবণ্য, এবার জ্বলে ওঠো অন্য অহংকারে’

 

হে ঈশ্বর

আমি শব্দমুগ্ধ মানুষ; দুগ্ধবৎ পান করি অজর অক্ষর

হৃদয় ফুলে ওঠে; তারপর শরীরে নির্ধারিত জ্বর

 

সামান্য কথায় বাড়ি ফিরে আসি; আমি কি

আর কোনওদিন বাড়ির বাইরে যেতে পারব?

 

এক জ্বর থেকে সেরে উঠে আরেক জ্বরের দিকে

যেতে যেতে ভাবি ‘আর নয়, এবার আমার কবিতা

লিখে দিও তুমি, হে বেপাড়ার ঈশ্বর’

The submit কবিতাগুচ্ছ appeared first on Uttarbanga Sambad.



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *