কণ্ঠরোধ নয়, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা চাই

কণ্ঠরোধ নয়, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা চাই

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


বিশ্ব সংবাদপত্রর স্বাধীনতা সূচকে ভারত ১৫১তম স্থানে। নিরপেক্ষ সংবাদ এবং সাংবাদিকের নিরাপত্তা ছাড়া সূচকের নামমাত্র উন্নতি মূল‌্যহীন।

‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স’ (‘আরএসএফ’) প্রকাশিত বিশ্ব সংবাদপত্রর স্বাধীনতা সূচকে ভারত ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৫১তম স্থানে উঠে এসেছে। এই সূচকে ভারত ২০২৩ সালে ১৬১ এবং ২০২৪ সালে ১৫৯তম স্থানে ছিল। সংস্থার রিপোর্টে ভারত এখনও ‘অত্যন্ত গুরুতর’ বিভাগেই আটকে রয়েছে। এখনও সংবাদপত্রর স্বাধীনতার মৌলিক নীতিগুলির সঙ্গে লড়াই করে চলেছে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র। ‘আরএসএফ’ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বর্তমান অবস্থাকে ‘অানুষ্ঠানিক জরুরি অবস্থা’ বলে অভিহিত করে বলেছে যে, ‘২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এবং তঁার দল বিজেপি ও সংবাদমাধ‌্যমে আধিপত্য বিস্তারকারী বৃহৎ গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি অস্বাভাবিক সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর থেকে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’

সংস্থাটি ২০০২ সাল থেকে ‘বিশ্ব সংবাদমাধ‌্যমের স্বাধীনতা সূচক’ প্রকাশ করে আসছে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দেশের গণমাধ্যমে মুষ্টিমেয় শক্তিশালী গোষ্ঠীর আধিপত্য রয়েছে, যার মধে‌্য অনেকেই শাসক গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত। অন‌্যদিকে, প্রায়শই সমালোচনামূলক কণ্ঠস্বরকে রোধ করা হয় অথবা তাদের ‘টার্গেট’ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনি হয়রানি, এজেন্সির অভিযান, গ্রেফতার থেকে শুরু করে হত‌্যা পর্যন্ত দেখা গিয়েছে। এই ‘জরুরি অবস্থা’-র মূলে রয়েছে সংবাদমাধ‌্যমে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। এটি উদ্বেগের।
সাংবাদিকতা দুর্নীতি, বৈষম্য, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও পরিবেশগত সংকটের মতো সামাজিক সমস্যা নিয়ে কথা বলে, সত্য প্রকাশ করে।

কিন্তু সাংবাদিকরা যখন ভয়ের পরিবেশে কাজ করেন, যখন ভিন্নমত পোষণকারীদের শাস্তি দেওয়া হয়, তার অর্থ– গণতন্ত্র সংকটে। একটি ‘মুক্ত’ ও সমালোচনামূলক সংবাদমাধ্যম আনুষঙ্গিক ক্ষেত্র নয়, এটি গণতন্ত্রর অক্সিজেন। যখন সেই অক্সিজেন বন্ধ হয়ে যায়, তখন যা অবশিষ্ট থাকে, তা হল জনপ্রিয় শাসনের একটি ফঁাকা খোলস। ‘আরএসএফ’-এর ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে, ২০১৪ সালে কেন্দ্রে মোদি সরকার আসার পর সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত মিডিয়া মালিকানা এবং রাজনৈতিক অঁাতঁাতের কারণে ‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র’-য় সংবাদপত্রর স্বাধীনতা সংকটে পড়েছে। দেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে আরএসএফের মন্তব্য, ‘প্রতি বছর গড়ে দুই থেকে তিনজন সাংবাদিক খুন হন।

ভারত সংবাদমাধ্যমের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলির মধ্যে একটি।’ আরএসএফের এই সূচকটিকে একটি জাগরণের আহ্বান হিসাবে দেখা দরকার। সূচকে উন্নতি শুধু নয়, বরং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা, সংবাদমাধ‌্যমের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ রোধ করা, রাজনৈতিক উদ্দেশ‌্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপের অবসান ঘটানো এবং গণমাধ‌্যমের স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করার মাধ‌্যমেই প্রকৃত পরিবর্তন আসবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *