সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফিল্মস্টার হোক, রাজনৈতিক নেতা কিংবা বড় কোনও ব্যবসায়ী বা মাফিয়া। বহুবার অভিযোগ উঠেছে,পয়সা ফেললে জেলের ভিতর বসেই মেলে ফাইভ স্টার হোটেলের মতো সুবিধা। দিব্যি ব্যবহার করা যায় ফোন। জেলে বসেই ব্যবসা হোক বা মাফিয়ারাজ,সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এসি, ফ্রিজ থেকে টিভি, বিলাসবহুল বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সবকিছুই পাওয়া যায় জেলের সেলে। শুধু কী তাই! হরেক রকমের নেশার দ্রব্য, এমনকি টাকা দিলেই নাকি জেলে ভিতরে পাওয়া যায় রমণীও। এমন অভিযোগ উঠেছে বারবার। বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায়, এর জন্য আদপে দায়ী জেল কর্তৃপক্ষ। আইন শৃঙ্খলার ‘অন্দরে’ এই যে গভীর ‘পচন’ তা আটকাতে কড়া পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের।
অভিযুক্তরা যেন কোনও ভাবেই জেলে পাঁচতারা হোটেলের মতো সুবিধা না পায়। রেনুকাস্বামী খুনের মামলায় অভিযুক্ত কন্নড় অভিনেতা দর্শন থগুদীপার জামিনের আবেদন বাতিল করে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। জাস্টিস জে বি পার্দিওয়ালা ও জাস্টিস আর মহাদেবনের বেঞ্চ কন্নড় অভিনেতা দর্শন থগুদীপা,তাঁর স্ত্রী পবিত্র গৌড়া-সহ পাঁচ অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। অভিযুক্তরা যথেষ্ঠ প্রভাবশালী, তাঁরা জামিন পেলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে সেই কারণেই অভিযুক্তদের জেলে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিচারকরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পাঁচতারা হোটেলের মতো কোনও সুবিধা যেন দর্শন,পবিত্র এবং অন্যান্য অপরাধীরা না পান তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর অন্যথা হলে জেল সুপারকে সাসপেন্ড করারও আগাম সতর্কতা দিয়ে রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। কিন্তু কেন এই নির্দেশ? কারণ,এর আগে থগুদীপার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়,যে ভিডিওতে দেখা যায় দিব্যি চেয়ারে বসে সিগারেটে সুখটান দিচ্ছেন দর্শন থগুদীপা।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জুন মাসে বেঙ্গালুরুতে রেণুকাস্বামী নামে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে,দর্শনের স্ত্রী তথা মডেল ফ্যাশন ডিজাইনার পবিত্রাকে উত্তক্ত করতেন রেণুকা। তাঁকে অশ্লীল মেসেজও করতেন তিনি। হঠাৎই উধাও হয়ে যান রেণুকাস্বামী। পরে উদ্ধার হয় দেহ। ঘটনার তদন্তে পুলিশ দর্শন ও তাঁর স্ত্রী পবিত্রাকে গ্রেফতার করে। অভিনেতার ভক্তরা রেণুকাস্বামীকে মারধর করে,তাঁকে খুন করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। ২০২৪ সালে কর্ণাটক হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করেছিল, আজ সেই রায় খারিজ করেছে সুপ্রীম কোর্ট। রেণুকাস্বামী বাবা সুপ্রিমকোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।