অর্ণব দাস: নগর জীবনের রোজনামচায় প্রায়শই হাঁপিয়ে ওঠে মন। ইচ্ছে করে, একছুটে দূরে কোথাও সবুজের মাঝে গিয়ে শান্তি খুঁজতে। ইট-কাঠ-জঙ্গলের মধ্যেই কংক্রিটের নাগরিক জীবনের হাঁসফাঁস পরিস্থিতি থেকে সাময়িক মুক্তির জন্য এক টুকরো সবুজের আশ্রয় তৈরি হয়েছিল নিউটাউনের ইকো পার্কে। সে আজ থেকে প্রায় এক যুগ আগের কথা। অল্প সময়ের মধ্যেই কলকাতা শহরের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণকেন্দ্র হিসাবে নিজের পরিচিতি গড়ে তুলেছিল ইকো পার্ক। এবার সেই ধাঁচেই দ্বিতীয় ইকো পার্ক তৈরি হচ্ছে কলকাতা লাগোয়া শহরতলির মধ্যমগ্রামে। তার কাজও চলছে জোরকদমে।
জানা গিয়েছে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে মধ্যমগ্রামের ইকো পার্কে বাসিন্দারা শীতের আমেজ উপভোগ করতে পারবেন বলেই আশাবাদী মধ্যমগ্রাম পুরসভা। বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার সচেতনতায় বিগত প্রায় কুড়ি বছর ধরে পরিবেশ মেলার আয়োজন করে আসছে মধ্যমগ্রাম পুরসভা। এরই বৃহত্তর ভাবনা হিসাবে মধ্যমগ্রামে ইকোপার্ক তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তৎকালীন পুরসভার চেয়ারম্যান তথা বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। তখনই পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পানিহারা এলাকায় ১০ একর জমি চিহ্নিত করেছিল পুরসভা। প্রোজেক্ট প্ল্যানিংও হয়ে গিয়েছিল সেই সময়।
বছর পাঁচেক আগে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। তারপর কেএমডিএ-র পক্ষ থেকে ইকো পার্ক তৈরির অনুমোদন মেলে। কিন্তু পার্ক তৈরির ফান্ড নিয়ে কিছু জটিলতার কারণে এতদিন কাজ শুরু হতে দেরি হচ্ছিল। সম্প্রতি সেই সমস্যা মিটে যাওয়ায় কেএমডিএ-র সহায়তায় দ্রুতগতিতে কাজ শুরু হয়েছে। খরচ হচ্ছে ৩০ কোটির বেশি টাকা। পার্কের ভিতরে থাকবে একটি বড় মাপের জলাশয়। সেখানে পর্যটকরা বোটিং করার সুযোগও পাবেন। ইতিমধ্যেই এই জলাশয়ের পাড় বাঁধিয়ে গাছ লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। জলাশয়ের উপর দিয়ে যাতায়াতের জন্য তৈরি করা হবে দৃষ্টিনন্দন সেতু।
এছাড়াও পার্কে থাকবে দুষ্প্রাপ্য গাছ, তৈরি হবে ফুলের বাগান, থাকবে খেলার মাঠ-সহ লাইট অ্যান্ড সাউন্ড ফোয়ারা। প্রবীণদের হাঁটা, বসার ব্যবস্থা থাকার পাশাপাশি পার্কের ভিতরে থাকবে ফুড কোর্টও। পার্কের বাইরের বাউন্ডারি ওয়াল তৈরির কাজও চলছে জোরকদমে। এ প্রসঙ্গে পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ বলেন, “মধ্যমগ্রাম বা হৃদয়পুর রেল স্টেশন থেকে সরকারি এই পার্কে যাওয়া যাবে। বারাকপুর অথবা সোদপুর থেকে এই ইকোপার্কে আসতে হলে নীলগঞ্জ অথবা সাজিরহাট হয়ে আসা যাবে। যে গতিতে কাজ চলছে, আশা করা যায় চলতি বছরের ডিসেম্বরের আগে কাজ শেষ হয়ে যাবে।