দেব গোস্বামী, বোলপুর: নকল দূতাবাসের পর নকল থানা। ‘ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অ্যান্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন’ সংস্থা খুলে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ। ফের শিরোনামে বীরভূমের নলহাটির বিভাস অধিকারী। এবার নকল থানা খুলে প্রতারণার অভিযোগে নয়ডা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের জালে তার ছেলে-সহ আও চারজন। একসময় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছিল বিভাস অধিকারীর।
ধৃতেরা হল বিভাস অধিকারী ও তার ছেলে অর্ঘ্য অধিকারী। বাকিরা হল বাবুলচন্দ্র মণ্ডল, পিন্টু পাল, সমাপদ মাল, আশিস কুমার। বিভাসের ছেলে অর্ঘ্য আবার আইনে স্নাতক। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ভুয়ো থানা খুলে নিজেকে সরকারি আধিকারিক পরিচয় দিত বিভাস, তার ছেলে ও সাঙ্গপাঙ্গরা। বিভিন্ন ভুয়ো নথিপত্র দেখিয়ে তারা তোলাবাজি করত বলেই অভিযোগ। গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে পুলিশ নয়ডার সেক্টর ৭০-এর বিএসএস ১৩৬ নম্বর বাড়িতে হানা দেয়। সেখান থেকে বিভাস, তার ছেলে-সহ আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে একাধিক ভুয়ো নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ব্রিটেনেও অফিস রয়েছে বলেই জানিয়েছে ধৃতরা। তাদের জেরা করে আরও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাবে বলেই আশা তদন্তকারীদের।
প্রসঙ্গত, এর আগে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে একসময় নাম জড়ায় বিভাস অধিকারী। কুন্তল ঘোষ ও গোপাল দলপতিদের সূত্র ধরে সামনে আসে তার নাম। যদিও দু’জনকেই চেনেন না বলে দাবি করেছিলেন বিভাস। শোনা গিয়েছিল ধর্মীয় কার্যকলাপের যুক্ত বিভাস। নলহাটিতে একটি ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় আশ্রমের শাখা রয়েছে তাঁর দায়িত্বে। যদিও ওই ধর্মীয় আশ্রমের অন্য শাখা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিভাসের আশ্রমটি তাঁর ব্যক্তিগত। এর সঙ্গে কারও কোনও যোগ নেই। তবে এখনও বিভাসের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে রীতিমতো ধন্দ রয়েছে। খাতায় কলমে একসময় তিনি তৃণমূলের জেলা সভাপতি ছিল। মাঝে অবশ্য শোনা গিয়েছিল নলহাটির ব্লক সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। কিন্তু সেই ইস্তফা দলীয় রীতি মেনে হয়নি বলেও খবর। আবার তিনি নিজেই সংবাদমাধ্যমকে একবার জানিয়েছেন, বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে খুবই সুসম্পর্ক ছিল তাঁর। বিভাসের দাবি, নলহাটির আশ্রমে কৈলাস বিজয়বর্গীয় বেশ কয়েকবার গিয়েছেন। বিভাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পরও কৈলাস বিজয়বর্গীয় তাঁকে দেখতে যান। যদিও তিনি বিজেপিতে যোগ দেননি। সেই বিভাসই এবার পুলিশের জালে।