বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: চার মাস আগেই বোয়িং বিমানের জ্বালানি সুইচ নিয়ে ব্রিটেন থেকে সতর্কবার্তা এলেও তা গ্রাহ্য করেনি এয়ার ইন্ডিয়া, ডিজিসিএ বা কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক। ফলে বেঘোরে প্রাণ দিতে হয়েছে ১৭২ জন নিরীহকে। অন্যদিকে, আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে এবার সোচ্চার হলো পাইলটদের আন্তর্জাতিক সংগঠন। তাদের পক্ষ থেকে প্রাথমিক রিপোর্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, “এই রিপোর্টে অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা।” তাই এখনই কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছন সঠিক হবে না।
পাইলটদের আন্থর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশানাল ফেডারেশন অফ এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোশিয়েশনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার জানান হয়, যে প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকলেও উত্তর পাওয়া যায়নি। তাই এই রিপোর্টকে অনুমান হিসাবে ধরে নেওয়া যেতে পারে। একেবারেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পৌঁছনো যেতে পারে না। পাইলটদের আন্থর্জাতিক সংস্থার সাফ কথা, এই রিপোর্টকে প্রামাণ্য ধরে নিয়ে এখন কোনওরকম গুঞ্জনও ছড়ানো উচিত নয়।
এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমানটি আহমেদাবাদ থেকে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ার চার সপ্তাহ আগে, বিমানের জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সুইচ (ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ) নিয়ে সতর্ক করেছিল ব্রিটেনের সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি। গত ১৫মে ব্রিটেনের এই বিমান নিরাপত্তা সংস্থা একটি নির্দেশিকা জারি করে বোয়িংয়ের পাঁচটি মডেলের বিষয়ে বিমান সংস্থাগুলিকে প্রতিদিন জ্বালানি শাট-অফ ভাল্ভের অবস্থা পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয়। যার মধ্যে ৭৮৭ ড্রিমলাইনারও রয়েছে।
তারা জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর একটি এয়ারওয়ার্থিনেস ডিরেকটিভ অনুযায়ী, ফুয়েল শাট-অফ ভাল্ভ অ্যাকচুয়েটরগুলোতে সম্ভাব্য ত্রুটির আশঙ্কা রয়েছে। সিএএ-এর নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, প্রতিটি সংস্থা যেন তাদের বিমানের উপর এডির প্রভাব রয়েছে কি না, তা যাচাই করে এবং প্রয়োজনে ভাল্ভগুলির পরীক্ষা-নিরীক্ষা, মেরামত বা প্রতিস্থাপন করে। বিশেষত বোয়িং ৭৮৭ মডেলগুলির ক্ষেত্রে এই নির্দেশ কার্যকর করার জোর দেওয়া হয়। এই বিষয়টি সামনে আসে যখন ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটি এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে জানানো হয়, বিমানটির ওড়ার কিছু পরেই জ্বালানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণকারী সুইচ হঠাৎ ‘কাটঅফ’ অবস্থায় চলে যায়, যার ফলে দু’টি ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে পড়ে।