সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘জঙ্গিদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির।’ শনিবার এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লা। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা ও ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় গোটা দেশ যখন ফুঁসছে ঠিক সেই সময় ফারুকের এহেন মন্তব্যে রীতিমতো তপ্ত হয়ে উঠল ভূস্বর্গের রাজনীতি।
শনিবার ফারুক আবদুল্লার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্কের পালটা তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মেহবুবা মুফতি। এর জবাব দিতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ফারুক বলেন, “৩৪ বছর হয়ে গিয়েছে। এটা কে শুরু করেছিল? তারা কারা যারা সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে যেত, এবং আবার ফিরে আসত? কারা আমাদের পণ্ডিত ভাইদের এখান থেকে তাড়িয়েছিল? উত্তর দিন।” এরপরই বলেন, “তিনি (মেহবুবা) সেইসব জায়গায় যেতেন যেখানে আমি কখনও যেতাম না.. সেইসব জঙ্গিদের বাড়িতে। মেহবুবা মুফতির সব কথার জবাব দিলে ভালো লাগবে না। ওনাকে বলব, এই ধরনের মন্তব্য উনি যেন না করেন। আমরা কখনও সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। আমরা পাকিস্তানে কখনও ছিলাম না, এখনও নেই, ভবিষ্যতেও হব না। আমরা ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ভারতের মুকুট।”
উল্লেখ্য, এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শনিবার ফারুক আবদুল্লা বলেছিলেন, “স্থানীয়দের মদত ছাড়া এত বড় হামলা সম্ভব নয়। কোনও না কোনও ভাবে পহেলগাঁও হামলায় জড়িত আছেন স্থানীয়রা।” কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “আমার মনে হয় না কারোর সাহায্য ছাড়া এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। যদি কেউ সাহায্য না করে, তাহলে জঙ্গিরা কোথা থেকে এল? কীভাবে এল?” ফারুকের বক্তব্য, পাক জঙ্গিদের হ্যান্ডেলার সর্বত্র রয়েছে। এই হ্যান্ডেলরারাই আগে মুম্বই, উরি, রাজৌরিতে হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেছেন, “ধরা পড়ার আগে পর্যন্ত আমরা বলতে পারছি না অভিযুক্ত কারা। তবে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় যে কেউ যুক্ত থাকতে পারে।” তাঁর মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক শোরগোল শুরু হয় কাশ্মীরের রাজনীতিতে।
সোশাল মিডিয়ায় এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন পিডিপি নেত্রী মেহবুবা। তিনি বলেন, ফারুক আবদুল্লার এই মন্তব্য শুধু বিভ্রান্তিকর নয়, মারাত্মক। বিশেষ করে যখন জম্মু ও কাশ্মীরের পড়ুয়া ও ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতা মধ্যে রয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘পহেলগাঁও হামলায় কাশ্মীরিদের জড়িত থাকার যে অভিযোগ ফারুক সাহেব করেছেন তা অত্যন্ত আপত্তিকর ও দুঃখজনক। একজন কাশ্মীরি ও প্রবীণ নেতা হিসেবে তাঁর এই বক্তব্য বিভাজন তৈরি করতে পারে। কিছু সংবাদমাধ্যমকে সুযোগ করে দেবে কাশ্মীরি ও মুসলমানদের অপমান করার। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি।’ এর পাল্টা এবার মুফতির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেন ফারুক।