উত্তরে আলু ও চা চাষে ধাক্কা! পুজোর বাজারে কেনাকাটায় মন্দার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের?

উত্তরে আলু ও চা চাষে ধাক্কা! পুজোর বাজারে কেনাকাটায় মন্দার আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের?

খেলাধুলা/SPORTS
Spread the love


বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: উত্তরের দুই প্রধান অর্থকরী ফসল আলু ও চা চাষে এবার ধাক্কার আশঙ্কা! আর তার প্রভাব পড়বে পুজোর বাজারে? সেই আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। দুই ক্ষেত্রে লোকসানের জেরে কেনাকাটার ঢল এখনও দেখা যাচ্ছে না! দিনভর ফাঁকা দোকান, শপিংমল! শহরের রাজপথও শুনশান। বাইক-স্কুটি, মোবাইল ফোনের শো রুমগুলোতে বিক্রি কমেছে প্রায় ৭০ শতাংশ। বিক্রি নেই লোহালক্কর, প্রসাধনী বাজারেও। যে সামান্য খদ্দের মিলছে, সেটাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে দোকানিদের। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাইক-স্কুটি, মোবাইল ফোন দূরস্ত। প্রতিদিন কাপড়, জুতো, কসমেটিক্স এমনকী মিষ্টির পার্লারগুলোতেও  বিক্রি কমে ষাট শতাংশে নেমেছে।

ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গিয়েছে,  উত্তরের পুজোর আগে বাজারের বড় অংশ এখন আলু এবং চা পাতার দাম ও চা বাগানে পুজো বোনাসের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। হিমঘরগুলো থেকে আলু বাজারে পৌঁছতে এবং ছোট চা বাগানে পাতা উঠতে প্রাথমিকভাবে বাইক, স্কুটি, মোবাইল ফোনের কেনাকাটার হিড়িক শুরু হয়। অনেকে পুজোর আগে বাড়িঘর মেরামতের কাজে হাত দেন। তাই লোহালক্কর, সিমেন্ট, ইট, বালি, রংয়ের দোকানে ভিড় দেখা যায়। এরপর ধীরে ধীরে জামাকাপড়, জুতো, প্রসাধনী সামগ্রীর বিক্রি জমে ওঠে। এবার উলটো ছবি। কোনও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে বিক্রি নেই। কেন এমন পরিস্থিতি?

ব্যবসায়ীদের একাংশের মতে, একে আলুর বাজার মন্দা। তার উপর চা পাতার দাম নেমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে। হাতে টাকা না থাকায় বাজারগুলোতে গ্রামীণ এলাকার ক্রেতাদের ভিড় নেই বললে চলে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একমত কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “উত্তরে এখন ৫০ হাজারের বেশি ছোট চা বাগান। প্রায় দু’লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ওই চা বাগানের উপরে নির্ভরশীল। এবার কাঁচা চা পাতার কেজি প্রতি দাম ১৩ টাকা থেকে ১৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অথচ উৎপাদন খরচ ১৯ টাকা। ওই পরিস্থিতিতে প্রত্যেকের হাত খালি হয়ে আছে। কেমন করে শ্রমিকদের পুজো বোনাস দেওয়া যাবে সেই চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে। কে যাবে বাজারে কেনাকাটা করতে!”

অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরের ৫৫ টি হিমঘরে ২ কোটি ৮০ লক্ষ প্যাকেট আলু মজুত রয়েছে। প্রতি প্যাকেটে থাকে ৫০ কেজি আলু। সেই আলুর মাত্র ২৮ শতাংশ বের হয়েছে। এখন জ্যোতি আলুর ক্যুইন্টাল প্রতি দাম ১ হাজার ৫০ টাকা। ১০ টাকা ৫০ পয়সা কেজি। অথচ সেই আলু হিমঘরে রাখতে এবং সেখান থেকে বের করতে খরচ হচ্ছে ১ হাজার ৩৫০ টাকা। কুইন্টালে ৩০০ টাকা হিসেবে এক ট্রাক আলুতে লোকসান দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার টাকা। উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক দাস বলেন, “চায়ের পর উত্তরের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান স্তম্ভ আলু চাষ এবং আলুর ব্যবসা। ওই কাজে জড়িত ৫ লক্ষাধিক মানুষ। এবার লোকসানের ধাক্কায় তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই পুজোর কেনাকাটার কথা এখনও চাষি ও ব্যবসায়ীদের কেউ ভেবে উঠতে পারেনি।” তবে পুজোর দিন আরও এগিয়ে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বিক্রিবাটা বাড়বে বলে আশায় ব্যবসায়ীরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ






Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *