সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী শুক্রবার ১৫ আগস্ট। উপরি পাওনা শনি ও রবিবার। অফিসে একদিন ছুটি ম্যানেজ করতে পারলে কেল্লাফতে! তল্পিতল্পা গুটিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। কাছেই রয়েছে সমুদ্র। বছরের অন্যান্য সময়ের থেকে বর্ষাকালে বাংলার সমুদ্রসৈকতের রূপ কিন্তু অনেকটাই আলাদা হয়। কটাদিন একটু বিশ্রাম করেই কাটিয়ে দিতে পারেন।
দিঘা
বাংলার সমুদ্রসৈকত বললে প্রথমেই যে নামটা মাথায় আসে, তা নিঃসন্দেহে দিঘা। বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ আর মনোরম আবহাওয়া দিয়ে বছরের পর বছর পর্যটকদের আকর্ষণ করে চলেছে এই স্থান। ভালোবাসার টানে উইকএন্ড কাটাতে বারবারই এখানে এসে হাজির হন পর্যটকরা। বাড়ির কাছাকাছি রিফ্রেশমেন্টের জন্য এর চেয়ে ভালো জায়গা যেন আর কিছু হতেই পারে না। নিউ দিঘার সমুদ্রে পর্যটকরা ভিড় জমান স্নান করার জন্য। ওল্ড দিঘায় আবার বেশি মজা সন্ধেতে। আবার সঙ্গে রয়েছে জগন্নাথধাম। সৈকতে লাইন দিয়ে বিক্রি হচ্ছে সামুদ্রিক মাছ ভাজা। এর স্বাদ না নিলে তো সফরটাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এখানেই ঝিনুকের তৈরি বিভিন্ন ধরনের গয়না ও শো-পিস পেয়ে যাবেন। আত্মীয়স্বজনদের জন্য কিনে ফেলতে পারেন। নিউ অথবা ওল্ড দিঘায় অসংখ্য ছোট-বড় হোটেল ও রিসর্ট রয়েছে। বাজেট অনুযায়ী বুক করে ফেলুন।

শংকরপুর
দিঘার কাছের এই সমুদ্রসৈকতটি পর্যটকদের বেশ প্রিয়। অনেকে দিঘা ঘুরতে গেলে শংকরপুরেও ঢুঁ মারেন। এখানকার সমুদ্রসৈকতটি তুলনামূলকভাবে অনেক শান্ত। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গেলে তো কথাই নেই। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সৈকতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে আড্ডা দিতে পারেন। ইচ্ছে করলে ব্যাডমিন্টন ব়্যাকেট বা ভলিবলও সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারেন। দিগন্তে সূর্যাস্তের অনন্য দৃশ্য দেখে হোটেলে ফিরুন। সৈকতের কাছেই থাকার জন্য ভালো হোটেল পেয়ে যাবেন।

মন্দারমণি
অত্যন্ত জনপ্রিয় এই সৈকত। শংকরপুরের মতোই এখানকার সমুদ্রও বেশ ধীরস্থির প্রকৃতির। শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশের আকর্ষণেই সাধারণত নবদম্পতিরা মধুচন্দ্রিমার জন্য এই জায়গাকে বেছে নেন। সমুদ্র তীরবর্তী স্থানেই মাথা চারা দিয়েছে ছোট-বড় নানা হোটেল ও গেস্ট হাউস। তবে সাবধান। সৈকতে চলার সময় চোরাবালির দিকে নজর রাখবেন। নাহলে বিপদ হতে পারে। পর্যটকদের জন্য অবশ্য চোরাবালির অংশগুলো বিশেষভাবে চিহ্নিত করা রয়েছে।

তাজপুর
পূর্ব মেদিনীপুরের আরও একটি আকর্ষণীয় সমুদ্রসৈকত হল তাজপুর। এখানকার সৈকতটি বাকি সৈকতগুলোর থেকে অনেক বেশি চওড়া। বেশ অল্প দামে স্কুটি ভাড়া পেয়ে যাবেন। শান্ত সৈকতের বুক চিরে স্কুটি চালিয়ে ঘুরে নিন গোটা এলাকা। সৈকতের কোনও কোনও স্থান দূর থেকে দেখলে বেশি লালচে মনে হতে পারে। কেন বলুন তো? ঠিক ধরেছেন। কারণ এখানে সারি দিয়ে ঘুরে বেড়ায় অজস্র লাল কাঁকড়া। ইদানীং এই সৈকতে প্যারাগ্লাইডিং পর্যটকদের অত্যন্ত আকর্ষণীয় বিষয় হয়ে উঠেছে।

বকখালি
পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দিঘার মতো এখনও ততটা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি বকখালি। তবে দু’দিনের ছুটিতে এই সমুদ্রসৈকতে গেলে মোটেও হতাশ হতে হবে না। পরিষ্কার, শান্ত পরিবেশ আপনার মন জয় করবেই। তবে পর্যটকদের অভাবে এই সৈকতটির আশেপাশে খুব বেশি সংখ্যক হোটেল গড়ে ওঠেনি। বকখালি যাওয়ার পরিকল্পনা করলে আগে থেকে হোটেল বা রিসর্ট বুক করে যাওয়াই ভালো। কলকাতা থেকে বাসে যেতে সময় লাগে ঘণ্টা চারেক। এছাড়া শিয়ালদহ থেকে নামখানা স্টেশনে নেমেও বাসে করে যাওয়া যায়।
