সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাগদান পর্ব সম্পন্ন হয়েছে আগেই। কথা ছিল, সোমবার সাতপাকে বাঁধা পড়বেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পুত্র আভনের নেতানিয়াহু ও অমিত ইয়ার্দেনি। তবে সে বিয়েতে বাধ সাধল যুদ্ধ। ‘দ্য টাইমস অফ ইজরায়েল’ সূত্রের খবর, একদিকে ইরান ও ইজরায়েলের যুদ্ধ, অন্যদিকে দেশের অন্দরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে এই বিয়ে আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, এই বিয়ে উপলক্ষে সম্প্রতি প্রি-ওয়েডিং সেরেমনি করা হয়েছিল তেল আবিবে। যেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন বহু মানুষ। সেদিন একাধিক ছবিও প্রকাশ্যে আসে। যেখানে দেখা যায়, বহু অর্থ ব্যয় করে বিরাট জাঁকজমকের সঙ্গে জমকালো আয়োজন করা হয়েছে। এরপরই নেতানিয়াহুর উপর রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন ইজরায়েলবাসী। শুরু হয় বিক্ষোভ। অভিযোগ তোলা হয়, একদিকে যখন গাজায় হামাসের হাতে বন্দি রয়েছেন ইজরায়েলের বহু নাগরিক, সেই সময় কীভাবে এমন ঢাকঢোল পিটিয়ে উৎসবে মেতে উঠছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী? এমনকী বিয়ের অনুষ্ঠান হলে সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর হুঁশিয়ারি দেন স্বজন হারানো সাধারণ নাগরিকরা।
যদিও সে হুঁশিয়ারিকে ফুঁৎকারে উড়িয়ে বিয়ের আয়োজনের কোনও ত্রুটি রাখেননি নেতানিয়াহু। তবে নতুন করে সমস্যা বাঁধায় যুদ্ধ পরিস্থিতি। তারপরও অবশ্য বিয়ের আয়োজন সেরে ফেলা হয়। যেখানে বিয়ের আয়োজন করা হচ্ছিল সেখানে ১০০ মিটার এলাকার মধ্যে লোহার বাউন্ডারি দেওয়া হয়। যার উপর বসানো হয় কাঁটাতার। অনুষ্ঠানস্থলের ১.৫ কিলোমিটার এলাকায় আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর সঙ্গেই ছিল নিরাপত্তার ব্যাপক কড়াকড়ি। তারপরও শেষ মুহূর্তে এই বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, এই বিয়ের অনুষ্ঠান হলে সেখানে হামলা চালাতে পারে ইরান। ফলে নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই বাতিল করা হয়েছে এই অনুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ইরানের সামরিক ঘাঁটি এবং পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালানো হয় ইজরায়েলের তরফে। তার জেরে মৃত্যু হয়েছে ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের কমান্ডার এবং দুই শীর্ষ সেনা আধিকারিকের। প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলি শামখানিরও। এছাড়াও ৯ পারমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইজরায়েল। ইজরায়েলের অপারেশন ‘রাইজিং লায়ন’-এর পালটা ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩’ শুরু করেছে ইরান। দুই তরফের এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। শুক্রবারের পর শনি-রবিবারও একের অপরের উদ্দেশে বেলাগাম ড্রোন ও মিসাইল ছুড়েছে দুই দেশ।