সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ম্যাচটা ছিল নাইটদের কাছে মরণবাঁচন। হেরে গেলে এবছরের মতো প্লে অফ স্বপ্ন প্রায় শেষ হয়ে যেত। কথায় আছে, অতিরিক্ত ব্যর্থতার ভয় থাকলে সেই স্বপ্ন কখনওই পূর্ণ হয় না। তাই হয়তো এদিন খোলা মনে খেলার মন্ত্র নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন রাহানে, রাসেলরা। রাজস্থানকে ১ রানে হারিয়ে নাইটদের প্লে অফে যাওয়ার স্বপ্ন এখনও জিইয়ে রইল। রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ষষ্ঠস্থানে উঠল কেকেআর। কেকেআরের জয়ে ভূমিকা রাখলেন RR-রা। এই RR-কে ভাবা যেতেই পারে শেষ বেলায় রাসেল-রিঙ্কু ঝড়। আবার শুরুতে রহমানুল্লাহ, রাহানে মিলেও কিন্তু নাইটদের ভালো জায়গায় পৌঁছে দেয়। ভালো খেলেন আরেক ‘আর’ রঘুবংশী। অবশ্য বলতেও হয়, রানা অর্থাৎ হর্ষিত রাআনার ২ উইকেটের কথাও।
এদিন টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অজিঙ্ক রাহানে। যদিও শুরুটা ভালো হয়নি কেকেআরের। দ্বিতীয় ওভারে যুধবীর সিংয়ের বলে ১১ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন সুনীল নারিন। ঠিক সেখান থেকে আফগানি তারকা গুরবাজের সঙ্গে ইনিংসের হাল ধরেন অধিনায়ক রাহানে। পাওয়ার প্লে’র প্রথম ছ’ওভারে কেকেআরের স্কোর ১ উইকেটে ৫৬। যখন মনে হচ্ছিল বড় রানের পথে এগোচ্ছেন গুরবাজ, তখনই ছন্দপতন। মহিশা থিকশানার বলে ৩৫ রানের মাথায় ফেরেন তিনি। কেকেআরের রান তখন ৭.৩ ওভারে ৬৯। নাইট অধিনায়ক রাহানে ফিরলেন ২৬ বলে ৩০ রানে। কলকাতার রান তখন ১২.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১১১।
এরপরেই পাঁচ নম্বরে নামানো হয় ক্যারিবিয়ান ক্যারিবিয়ান তারকা আন্দ্রে রাসেলকে। ৪০৬ দিন পর কেকেআর জার্সিতে হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি। কেবল তাই নয়, ছ’টা বিশাল ছয়ের বিস্ফোরণে তিনি অপরাজিত থাকলেন ২৫ বলে ৫৭ রানে। অঙ্গকৃষ রঘুবংশী করলেন ৩১ বলে ৪৪। শেষের দিকে রিঙ্কু সিং দু’টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৬ বলে অপরাজিত থাকলেন ১৯ রানে।
২০৭ রানের পাহাড়প্রমাণ লক্ষ্যের কাছে খেই হারিয়ে ফেলেন বৈভব সূর্যবংশী। ইনিংসের শুরুটা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে করলেও দ্বিতীয় বলেই আউট হতে হল। তাঁকে ফেরালেন বৈভব আরোরা। পরের ওভারেই মইন আলির বলে কোনও রান না করেই সাজঘরে ফেরেন এ ম্যাচে অভিষেক ঘটানো কুণাল সিং রাঠোর। যদিও যশস্বী জয়সওয়াল চেনা মেজাজেই ছিলেন। কিন্তু মইন আলির বলে একটা মিস হিট তালুবন্দি করেন রিঙ্কু সিং। এরপর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট খুইয়ে ধুঁকতে থাকে গোলাপি বাহিনী। মাত্র ৭৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে রাজস্থান। বরুণ চক্রবর্তীর ‘রহস্য’ তখন একেবারের পড়তে পারছিলেন না ধ্রুব জুড়েল, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গারা। দুই ব্যাটারই শূন্যে ফেরে বরুণের কাছে হার মেনে।
রাজস্থানকে ম্যাচে ফেরান অধিনায়ক রিয়ান পরাগ। মইন আলির চতুর্থ ওভারে পাঁচ বলে পাঁচটি বিশাল ছক্কা হাঁকান তিনি। এই ওভারে ৩২ রান দিলেন মইন। এর পরের ওভারে বরুণ চক্রবর্তীর বলে এক রান নেন হেটমায়ার। পরাগ আবার ছক্কা হাঁকান। এভাবেই পরপর ছ’বলে ছ’টি ছয় মারেন তিনি। সেই যে পরাগের সুবাস ছড়ানো শুরু, তা থামল ৯৫ রানে। তখনই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। পরাগের সুগন্ধ ভুলিয়ে প্লে অফের স্বপ্ন চাঙ্গা রইল কেকেআর। যদিও শেষের দিকে শুভম দুবে হার না মানা মনোভাব নিয়ে ১৪ বলে ২৫ রান করেন।