সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘জয় ভবানী’ শব্দটি যেন ফিরেফিরে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে ছত্রপতি শিবাজির একদা গড়ে তোলা সেই প্রাচীন ঐতিহাসিক কেল্লাগুলির গোপন কক্ষে। প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগের সেই মন্ত্রধ্বনি বাতাসে গুঞ্জিত হচ্ছে। সম্প্রতি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পেয়েছে শিবাজি মহারাজের স্মৃতিবিজড়িত ১২টি ঐতিহাসিক দূর্গ। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার মহারাষ্ট্র সার্কেলের প্রত্নতত্ত্ববিদ ও কর্মীরা দীর্ঘ ১৮ মাসের অক্লান্ত লড়াইয়ে এই তকমা জিতে নিয়েছেন।
ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পেল ‘মারাঠা মিলিটারি ল্যান্ডস্কেপ’। তালিকায় রয়েছে ছত্রপতি শিবাজির ১২টি দূর্গ। এর মধ্যে ১১টি মহারাষ্ট্রে ও একটি রয়েছে তামিলনাড়ুতে। এই স্বীকৃতি দেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক পরম্পরার এক অনন্য সম্মান। তাই, সময় না নষ্ট করে এবারে বেরিয়ে পড়ুন। ইতিহাসকে ছুঁয়ে দেখার এই সুযোগ মিস করবেন না একদম!
প্রতাপগড় দূর্গ: ১৬৫৯ সালে এই দূর্গের পাদদেশে শিবাজি মহারাজ ও আফজাল খানের মধ্যে বিখ্যাত প্রতাপগড়ের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। এই যুদ্ধে মারাঠারা বিজয়ী হন। এই দূর্গ মারাঠা সাম্রাজ্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় দখল করে আছে।
পানহালা দূর্গ: এগারোশো শতাব্দীতে শিলাহারা রাজবংশের শাসনকালে এই দূর্গ তৈরি হয়েছিল। ১৬৬০ সালে শিবাজিকে এই কেল্লায় আটকে রাখার চেষ্টা করা হলে তিনি কৌশলে এখান থেকে পালিয়ে যান।
রায়গড় দূর্গ: এই দূর্গটি ১৬৫৬ সালে দখল করে এটিকে মারাঠা সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলেন ছত্রপতি শিবাজি।
শিবনেরি দূর্গ: এই দূর্গটি ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত। মারাঠা সাম্রাজ্যের উত্থানে ও মারাঠা স্বাধীনতায় এই দূর্গ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত।
লোহগড় দূর্গ: মহারাষ্ট্রের লোনাভলার কাছে অবস্থিত এই পাহাড়ি দূর্গ ট্রেকিংয়ের জন্য বেশ জনপ্রিয়। শিবাজি মহারাজের সময়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কেন্দ্র ছিল।
সালহের দূর্গ: ১৬৭২ সালে এই দূর্গের কাছে মারাঠা এবং মুঘলদের মধ্যে সালহেরের যুদ্ধ হয়েছিল, যেখানে মারাঠারা জয়লাভ করে।
সিন্ধু দূর্গ: ১৬শ শতাব্দীতে শিবাজি মহারাজ এই দূর্গটি নির্মাণ করেছিলেন। এটি মারাঠাদের নৌ সদর দপ্তর হিসেবে পরিচিত।
সুবর্ণ দূর্গ: গোল্ডেন ফোর্ট নামে পরিচিত এই দূর্গটি মহারাষ্ট্রের কোঙ্কন উপকূলে অবস্থিত। মারাঠা নৌবাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি ছিল।
বিজয় দূর্গ: মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদূর্গ জেলায় অবস্থিত এটি একটি প্রাচীন সামুদ্রিক দূর্গ। ভারতের পশ্চিম উপকূলের সবচেয়ে শক্তিশালী সামুদ্রিক দূর্গগুলির মধ্যে এটি অন্যতম।
খান্দেরি দূর্গ: এটি মুম্বইয়ের প্রবেশপথ রক্ষার জন্য তৈরি হয়েছিল। মহারাষ্ট্রের মুম্বই উপকূলে অবস্থিত একটি ছোট দ্বীপ।
জিঞ্জি দূর্গ: “প্রাচ্যের ট্রয়” নামে পরিচিত এই দূর্গ তামিলনাড়ুর ভিলুপুরম জেলায় অবস্থিত। এই দূর্গটি মারাঠা, মুঘল এবং ব্রিটিশদের মধ্যে অনেক যুদ্ধের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন