সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত রাশিয়া থেকে যে শুধু তেল কিনছে সেটাই নয়। বরং মুনাফার জন্য তা খোলা বাজারে বিক্রিও করছে। এখানই শেষ নয়। ইউক্রেনের মৃত্যুমিছিলে আদও রুশ ‘বন্ধু’ ভারতের কিছু এসে যায় না। তাই নয়াদিল্লির উপর শুল্কের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করা হবে। সোমবার ভারতকে এমনই হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প তাঁর সোশাল মিডিয়া ট্রুথ সোশালে লেখেন, ‘ভারত রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে তেল কিনছে। সেই তেলের বেশিরভাগই তারা খোলা বাজারে বিক্রি করে মুনাফা কামাচ্ছে। রাশিয়ার লাগাতার হামলার জেরে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের মৃত্যুমিছিলে আদও রুশ ‘বন্ধু’ ভারতের কিছু এসে যায় না। এই কারণেই আমেরিকা ভারতের উপর আরও চড়া হারে শুল্ক আরোপ করবে।’
ভারত-আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে এখনও কোনও আশার আলো দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে গত বুধবার ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি সাফ জানান, ভারতের বন্ধু হলেও তাদের উপর শুল্ক চাপানো হচ্ছে। আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে এই নতুন শুল্কহার। পাশাপাশি, তিনি আরও জানান, ভারত রাশিয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে তেল এবং অস্ত্র কেনে। সেকারণেই ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়েছে।
শুক্রবার থেকে কার্যকর হয় ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতি। তারপরেই মূলত রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে নানা সূত্র মারফত খবর ছড়ায়, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেবে ভারত। তার কারণ, রুশ তেলের দামে এতদিন পর্যন্ত যতটা পরিমাণ ছাড় মিলছিল সেটা বর্তমানে কমে গিয়েছে। তাছাড়া আমেরিকা সরাসরি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ভারতের রুশ তেল কেনা নিয়ে। এই যুক্তি দেখিয়ে রয়টার্সের তরফে বলা হয়, ভারতের চারটি শোধনাগার নাকি গত এক সপ্তাহে রুশ তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। এই চারটি শোধনাগার হল, ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রো কেমিক্যালস।
রয়টার্সের এই খবর ছড়াতেই তুমুল জল্পনা শুরু হয়। তাহলে কি ট্রাম্পের চাপের মুখে নতি স্বীকার করল ভারত? যদিও ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “শক্তি সম্পদের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান সকলেই জানে। আমাদের চাহিদা অনুযায়ী, জাতীয় স্বার্থ এবং বাজারের পরিস্থিতি দেখে শক্তিসম্পদ আমদানি করা হয়।” বিদেশমন্ত্রকের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, শক্তিসম্পদ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের কী অবস্থান। রুশ তেল কেনা যে বন্ধ হয়নি তা-ও স্পষ্ট করে দেয় কেন্দ্র। প্রসঙ্গত, বিদেশমন্ত্রী এস জয়সওয়াল জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিন ধরেই সুদৃঢ় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে। ফলে এখনই রুশ তেল কেনা বন্ধ করে দেবে ভারত, এই দাবির বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।