সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিমান দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও বিপর্যয়ের কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশাই রয়ে গিয়েছে। অসামরিক বিমান চলাচল নিয়ামক সংস্থা ডিজিসিএ জানিয়ে দিয়েছে যে বিমানের ইঞ্জিনে পাখির ধাক্কাতেই ‘দুর্ঘটনা’। কিন্তু, বাস্তব পরিস্থিতি সেই দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলেই বিশেষজ্ঞদের মত। গাফিলতির তত্ত্ব যত জোরালো হচ্ছে তত চাপ বাড়ছে কেন্দ্রের উপর। সেই চাপের মুখে একপ্রকার বাধ্য হয়েই উচ্চস্তরীয় একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিল অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। একই সঙ্গে বিমান রক্ষণাবেক্ষণের নিয়মেও বদল আসতে পারে বলে খবর।
শনিবার রাতে এক্স হ্যান্ডেলে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের তরফে উচ্চস্তরীয় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রধান সচিবের নেতৃত্বে গঠিত ওই কমিটিতে আহমেদাবাদের পুলিশ কমিশনার, বায়ুসেনার ডিজি, সিভিল অ্যাভিয়েশনের ডিজি, ফরেনসিক বিভাগের আধিকারিক, আইবির স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রয়েছেন। ওই কমিটি বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত করার পাশাপাশি বিমান চলাচলের রক্ষণাবেক্ষণের SOP বা অর্থাৎ স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওরে বদলের প্রয়োজন আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখবে। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক জানিয়েছে, এই কমিটি স্বাধীনভাবে কাজ করবে। অন্য কোনও তদন্ত কমিটির কাজে হস্তক্ষেপ করবে না।
ইতিমধ্যেই ধংস বিমানের ব্ল্যাকবক্স ঘটনাস্থল, মেঘানিনগরে চিকিৎসকদের হস্টেলের ছাদ থেকে উদ্ধার হয়েছে। সেটি এখন এনএসজি-র প্রহরায় রাখা হয়েছে। ব্ল্যাকবক্সের তথ্য বিশ্লেষণ করে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণের আভাস মিলবে। কিন্তু, শুধু স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত নয়, ওই বিপর্যয়ে দায়ীদের বিচার ও জবাবদিহির দাবি উঠেছে দেশজুড়ে। আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার পৃথকভাবে তদন্ত করছে ডিজিসিএ এবং অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের অধীন এয়ারক্রাফ্ট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। আমেরিকা সরকারের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি) এবং ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) সম্মিলিতভাবে আমেরিকা থেকে তদন্ত সহযোগিতা করছে। বোয়িং এবং জিই এয়ারোস্পেস তদন্তে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ২৭০। এখনও ধংসস্তূপ থেকে দেহ বেরোচ্ছে।
তবে, দুর্ঘটনার আগমুহূর্তে ফ্লাইট এআই-১৭১-এর পাইলটের শেষ কথাগুলি এখন তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে। রানওয়ে থেকে টেক-অফের পরমুহূর্তেই পাইলট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে (এটিসি) ‘মেডে’ বার্তা পাঠান। বলেছিলেন, ‘ইঞ্জিনে জোর পাচ্ছি না, পাওয়ার চলে যাচ্ছে, তুলতে পারছি না।’ এই মাত্র তিনটি বাক্যেই ধরা পড়েছে মর্মান্তিক প্রযুক্তি ব্যর্থতা, গাফিলতির পরত- যা শেষ পর্যন্ত ছিনিয়ে নিয়েছে দুই শতাধিক প্রাণ।