সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কসবায় চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুন। কসবা আইন কলেজে ছাত্রীর সম্ভ্রম হরণ। ওড়িশায় নরপিশাচদের হাতে নির্যাতিতা তরুণীর আত্মদাহ! দেশে এ যেন এক নতুন অন্ধকার যুগ। তবুও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্ষণ-বিরোধী অপরাজিতা বিল ফেরত পাঠিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। কোথায় আপত্তি? কেন অনীহা? ‘বেটি-বাঁচাও বেটি পড়াও’ যে প্রধানমন্ত্রী বলেন তারই সরকার কেন করছে এই দ্বিচারিতা?
সূত্রের খবর, অপরাজিতা বিলে প্রবল আপত্তি জানিয়েছে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। অপরাজিতা বিলে প্রস্তাবিত মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত ধারা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিলটি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলে প্রস্তাবিত কয়েকটি সংশোধনী নিয়ে কেন্দ্র আপত্তি তোলে। তা রাজভবনকে জানানো হয়েছে। এবং বিলটি রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, আর জি কর ধর্ষণ ও খুনের পর নারী নির্যাতনের অপরাধে কঠোরতম শাস্তির লক্ষ্যে রাজ্য সরকার অপরাজিতা বিল (২০২৪) এনেছিল। তাতে বিএনএস বা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ২০২৩-এর ৬৪ নম্বর ধারা সংশোধনের মাধ্যমে ধর্ষণের শাস্তি বাড়িয়ে ১০ বছরের পরিবর্তে যাবজ্জীবন (আজীবনের জন্য) বা মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
শাহের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক অপরাজিতা বিলের এই সংশোধনীকে অতিরিক্ত ‘কঠোর ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ বলে মনে করেছে। এছাড়াও, বিলটিতে ৬৫ নম্বর ধারা বাতিলের প্রস্তাব রয়েছে, যার ফলে ১৬ বছরের নীচে ও ১২ বছরের নীচে ধর্ষণের শাস্তির মধ্যে যে পার্থক্য ছিল, তা মুছে ফেলার কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রের মতে, এমন সংশোধনী শাস্তির মাত্রার ভারসাম্য নষ্ট করবে। আক এখানেই উঠছে প্রশ্ন। তবে কি নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ রুখতে যেখানে দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সর্বোচ্চ সাজার পক্ষে, সেখানে কেন্দ্রের মনোভাব কি নমনীয়?
বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলার সরকার যতটা নারী সুরক্ষায় সচেষ্টা, বিজেপি ঠিক তার উলটো। বিজেপি দোষীদের কঠোরতম চায় না। এবার বিজেপির মুখোশ খুলে যাচ্ছে।”