‘আর গুজরাটে ফিরে যাব না’, ঘরে ফিরে বাংলাতেই কাজ করতে চান খড়গপুরের ১৩ পরিযায়ী শ্রমিক

‘আর গুজরাটে ফিরে যাব না’, ঘরে ফিরে বাংলাতেই কাজ করতে চান খড়গপুরের ১৩ পরিযায়ী শ্রমিক

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলার শ্রমিকদের থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গুজরাটে থানায় ঘটা অভিজ্ঞতার কথা মনে করলেই ভীত হচ্ছেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য থেকে চরম আতঙ্ক নিয়ে খড়্গপুরে ফিরলেন ১৩ জন পরিযায়ী শ্রমিক। জানিয়ে দিলেন, আর বাইরে শ্রমিকের কাজ করতে যাবেন না। এবার থেকে রাজ্যে থেকেই কাজ করবেন তাঁরা।

আগেই বাড়ি ফিরে এসেছিলেন তিনজন। এবারে দীর্ঘ ১১ দিনের ‘নরকযন্ত্রণা’ ভোগ করে গুজরাট থেকে বাড়ি ফিরলেন বাকি ১৩ জন পরিযায়ী শ্রমিক। এই ১৩ জনের মধ্যে পিংলা ব্লকের গোবর্ধনপুর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের সাহরদা এলাকার ১১ জন রয়েছেন। আর বাকি দু’জন সবং থানার শীতলদা এলাকার। শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটেয় তাঁরা বাড়ি ফিরলেন। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বিজেপিশাসিত বিভিন্ন রাজ্যে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। বাংলাদেশি অভিযোগে শ্রমিকদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে গিয়ে মারধর করা হচ্ছে! অনেককে পুশব্যাক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়াও হয়েছে! এবার গুজরাটে ১৩ জন বাংলার শ্রমিক হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ।

জানা গিয়েছে, গত ২৭ জুলাই ১৬ জনের একটি দল গুজরাটের সুরাটে কাজের জন্য গিয়েছিলেন। সেদি রাতেই সুরাট থানার পুলিশ হানা দেয় বলে অভিযোগ। ১০ জনকে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে মারতে মারতে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেখানে আটকে রাখা হয়। বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে ভয় দেখানো হত বলে অভিযোগ। এদেশের নাগরিক হিসেবে পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়েছিল। শেষপর্যন্ত ২৮ আগস্ট রাত ১২টা নাগাদ পুলিশ সকলেই ছেড়ে দেয়।

ঘটনার পর সকলেই প্রবল আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। ওই ঘটনার দুই দিন পরেই তিনজন ফিরে আসেন। বাকি ১৩ জন কোম্পানির একটি গুদামে দিন কাটাতে শুরু করেন। শেষপর্যন্ত তাঁরা মেদিনীপুরের বাড়িতে ফিরলেন। বৃহস্পতিবার সকালে মুম্বই থেকে গীতাঞ্জলি সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসে চেপে শুক্রবার বিকালে খড়গপুর স্টেশনে পৌঁছন সকলে। সেখানে তাঁদের স্বাগত জানান পিংলার বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অজিত মাইতি, জেলা পরিষদের সদস্য বীরেন্দ্র নাথ মাইতি, পিংলার তৃণমূল নেতা চণ্ডী সামন্ত, খড়গপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

পিংলা ব্লকের গোবর্ধনপুর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের সাহড়দা এলাকার বাসিন্দা অরূপ জানা বলেন, “আমাদের ফেরার ব্যাপারে অজিত মাইতি সমস্ত রকমের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তিনি আমাদের ফেরার ট্রেনের টিকিটের ব্যবস্থা করেন। তাঁর প্রতি আমরা সকলেই কৃতজ্ঞ।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন ” আমরা আর গুজরাতে ফিরে যাব না। আমাদের থানায় বায়োডাটা-সহ যাবতীয় তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। আমরা বাড়িতে থেকেই কাজ করতে চাই।” বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, “গুজরাটে আটকে থাকা এই যুবকদের ফিরিয়ে আনতে পেরে স্বস্তি পাচ্ছি। ওদের থানায় বায়োডাটা সহ যাবতীয় তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। ওদের কর্মসংস্থানের একটা চেষ্টা সরকার করবে।” এদিকে বাড়িতে ছেলে ফিরে আসায় মা লতিকা জানা বলেন, “আমরা আর কিছু চাই না। ছেলে ফিরে এসেছে এটাই যথেষ্ট। এখানে যা কাজ জুটবে সেটাই করবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ






Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *