সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিজয়োৎসবে একের পর এক মৃত্যু। ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ পুলিশ, মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স, ছিল না ন্যূনতম ব্যবস্থাপনা। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে পদপিষ্ট হওয়ার পরিস্থিতির জন্য যে সঠিক পরিকল্পনার অভাব এবং প্রশাসনের গাফিলতি দায়ী সেটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। স্বাভাবিকভাবেই কাঠগড়ায় উঠছে বেঙ্গালুরুর কংগ্রেস সরকার। বিজেপি বলছে, পুরো ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত হওয়া দরকার।
আরসিবি আইপিএল জেতার পর থেকেই বেঙ্গালুরুজুড়ে বিজয়োল্লাস চলছে। বুধবার শহরে একটি রোড-শো হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা প্রশাসন বাতিল করে যানজটের কথা ভেবে। বদলে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সেলিব্রেশনের আয়োজন করে কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থা। সেটাতেই বিপত্তি। এই সেলিব্রেশনের জন্য লক্ষ লক্ষ সমর্থক জড়ো হন স্টেডিয়ামের বাইরে। স্টেডিয়ামে ঢোকার জন্য আলাদা পাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্টেডিয়ামের আসন সংখ্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মানুষ সেখানে জড়ো হন। রাস্তায় বিরাট যানজট হয়ে যায়। পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়ে। প্রাণে বাঁচতে সমর্থকরা একে-অপরকে টপকে পালাতে যান। তাতে পদপিষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ৫০ জন।
পুরো ঘটনার জন্য একযোগে কংগ্রেস সরকারকে দায়ী করেছে রাজ্যের দুই বিরোধী দল বিজেপি এবং জেডিএস। বিজেপির রাজ্য সভাপতি ওয়াই এস বিজয়েন্দ্রর বক্তব্য, “অপরিকল্পিতভাবে প্রচারের আলো কাড়ার চেষ্টাতেই এই দুর্ঘটনা। শুধু পরিকল্পনা, পুলিশ আর অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে ১১ জনের প্রাণ গেল।” প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিএস নেতা কুমারস্বামী বলছেন, “প্রস্তুতির অভাব ছিল। সঠিক পরিকল্পনা ছিল না। এর জন্য রাজ্যের কংগ্রেস সরকার দায়ী।” বিসিসিআইয়ের তরফেও গোটা ঘটনার জন্য রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের পরিকল্পনার অভাবকে দায়ী করা হয়েছে। বোর্ড সচিব দেবজিৎ সায়কিয়া বলছেন, “এটা খুব দুঃখজনক। পুরো অনুষ্ঠানটা আরও পরিকল্পিতভাবে করা যেত।” বোর্ড সচিব স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পুরো অনুষ্ঠানে বিসিসিআইয়ের কোনও ভূমিকা ছিল না। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মৃতদের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
সূত্রের দাবি, পুলিশের অব্যবস্থায় ক্ষুব্ধ জনতা একটা সময় বিধানসভাতেও পাথর ছোড়ে। তাতে কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। যদিও তাতে হুশ ফেরেনি মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বা উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমারের। তাঁরা তখনও বিরাট কোহলিদের সঙ্গে সেলিব্রেশনে ব্যস্ত ছিলেন। যদিও নিজেদের ব্যর্থতা মেনেছেন শিবকুমার। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি সামলানোর জন্য ৫০০০ নিরাপত্তারক্ষী ছিল। কিন্তু আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি।”