সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনাথ সিংয়ের পর মার্কিন ‘শুল্কবোমা’ নিয়ে কড়া মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি। শনিবার নাগপুরে আমেরিকার নাম না করে তিনি মন্তব্য করেন, কিছু দেশ গোটা বিশ্বে ছড়ি ঘোরাচ্ছে, কার্যত দাদাগিরি করছে। যেহেতু তারা অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত ভাবে প্রভাবশালী।
শনিবার নাগপুরে বিশ্বেশ্বরায়া ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (ভিএনআইটি) ভাষণ দেন গড়কড়ি। সেখানে তিনি আমেরিকা বা ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম না তুলে বলেন, “যারা অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী, তারাই ‘দাদাগিরি’ করছে। তাদের কাছে উন্নত প্রযুক্তিও আছে। যদি আমরা উন্নত প্রযুক্তি এবং সম্পদের অধিকারি হই তাহলেও আমরা কাউকে হুমকি দেব না। কারণ আমাদের সংস্কৃতি শেখায় যে বিশ্বের কল্যাণ সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ।”
রবিবার ট্রাম্পের শুল্কবোমা নিয়ে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা রাজনাথ সিংও। তিনি বলেন, “বিশ্বশক্তি হিসাবে ভারতের উত্থানকে স্বাগত জানাতে রাজি নয় ‘সব কা বস’ (সবার মালিক)।” বলা বাহুল্য, নাম না করে আমেরিকাকেই ‘সব কা বস’ বলেছেন রাজনাথ। মধ্যপ্রদেশের একটি সভায় ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে রাজনাথ বলেন, “যে গতিতে উত্থান হচ্ছে ভারতের তা কিছু মানুষকে খুশি করতে পারছে না। বিষয়টা তাদের পছন্দ না। ‘সব কা বস তো হাম হ্যায়’ (সবার মালিক তো আমি), তবে ভারত এত দ্রুত গতিতে কীভাবে এগিয়ে চলেছে? ভারতে তৈরি পণ্য অন্য দেশে রপ্তানি করলে যাতে ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে, এখন সেই চেষ্টা চলছে।” পাশাপাশি কেন্দ্রীয়মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন, “কিন্তু ভারত যে গতিতে এগিয়ে চলেছে, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি, কোনও বিশ্বশক্তিই আমাদের শক্তিশালী হয়ে ওঠা থেকে আটকাতে পারবে না।”
উল্লেখ্য, পহেলাগাঁও হামলার পর অপরেশন সিঁদুর অভিযান চালায় ভারত। বাণিজ্য চুক্তির শর্তে তৃতীয়পক্ষ হিসাবে ভারত-পাক যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছেন বলে বারবার দাবি করেন ট্রাম্প। যতবার ট্রাম্পের দাবি নস্যাৎ করেছে দিল্লি, ততবার নতুন করে এশিয়ার দুই শক্তির যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেছেন ধনকুবের মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এখানেই না থেমে, রাশিয়ার থেকে তেল কেনার ‘অপরাধে’ দুই দফায় ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। এই বিষয়ে মোদির ‘বন্ধু’র মন্তব্য, ‘প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ভারত বর্তমানে রুশ তেল আমদানি করছে। তাই আমার মনে হয় ভারতের উপর আরও বেশি শুল্ক চাপানো দরকার।’
এরপরেই ‘বন্ধু’র সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খোলেন মোদি। তিনি বলেন, “কৃষকদের স্বার্থই আমাদের কাছে অগ্রাধিকার। ভারত কখনোই তার কৃষক এবং মৎস্যজীবীদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করবে না।” তাৎপর্যপূর্ণভাবে মোদি আরও বলেন, “আমি জানি যে এর জন্য আমাকে ব্যক্তিগতভাবেও বিরাট মূল্য চোকাতে হবে, কিন্তু আমি প্রস্তুত আছি।” যেহেতু দেশের স্বার্থ জড়িত। বিদেশমন্ত্রকও ট্রাম্পের নীতির বিরোধিতা করেছে। যদিও এরপরেও নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই অবস্থায় দিল্লি যে বেজায় অস্বস্তিতে তা বলা বাহুল্য।