অর্ণব দাস, বারাসত: একবার নয়, এর আগেও একাধিকবার মধ্যমগ্রামে এসেছিলেন বিস্ফোরণ-কাণ্ডে মৃত সচ্চিদানন্দ মিশ্র। রবিবার মধ্যরাতে মধ্যমগ্রামে যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, তাতে সামনে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে প্রেমিকার টানে সে যে মধ্যমগ্রামে এসেছিল, তা একপ্রকার নিশ্চিত তদন্তকারীরা। তবে একবার নয়, একাধিকবার সচ্চিদানন্দ মধ্যমগ্রামে এসেছিল বলে দাবি স্থানীয়দের। এমনকী প্রেমিকার বাড়িতে কাটিয়েছে রাতও। কিন্তু রবিবার বদলে যায় পরিস্থিতি। পুলিশ সূত্রে খবর, সেদিন প্রেমিকার স্বামীকে খুন করবে বলে একপ্রকার মনস্থির করে ফেলেছিল সচ্চিদানন্দ। কিন্তু পুলিশের দাবি, অসাবধানতার ফলে ব্যাগে থাকা আইইডি ফেটে যায়।
আর তাতেই মৃত্যু হয় উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা সচ্চিদানন্দের। তবে ছেলের প্রেমের খবর কিছুই জানত না সচ্চিদানন্দের পরিবার। মৃত্যুর খবর শুনেই মঙ্গলবার সকালে মধ্যমগ্রামে ছুটে এসেছেন বাবা অশ্বিনী কুমার মিশ্র। তিনি বলেন, ”রবিবার রাতেই পুলিশ ফোন করে জানায় বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে ছেলের। আমরা বারাণসীতে ছিলাম। কিছুই জানতাম না।” এমনকী ছেলের সম্পর্কের কথাও জানতেন না বলে জানান অশ্বিনী। পড়াশোনায় মোটামুটি ছিল সচ্চিদানন্দ। বাবার কথায়,”বিএ পাশ করে আইটিআই পড়েছিল।”
তবে বোমা বানাতে সে কি সত্যিই ছিল পারদর্শী? অশ্বিনী কুমার মিশ্রের দাবি, ”ছেলে বিশেষ কথা বলত না। তবে কোনওদিন এমন কোনও যন্ত্র সে বানায়নি।” অন্যদিকে মেয়ের বিবাহবর্হিভূত সম্পর্কের কথা জানতেন না তাঁর বাবাও। তিনি স্পষ্ট বলেন, ”এই বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। তবে গত দুমাসে ছেলেটি একবার জামাইয়ের বাড়িতে এসেছিল দেখেছিলাম।” জানা গিয়েছে, মধ্যমগ্রাম স্কুলের সামনে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকত ওই মহিলা। ওই বাড়ির মালিক গোবিন্দ চৌধুরী একাধিকবার সচ্চিদানন্দকে তাঁর বাড়িতে আসতে দেখেছিলেন। এমনকী সে রাত কাটায় বলেও দাবি।
গোবিন্দবাবু জানিয়েছেন, ”পাড়ারই মেয়ে, গত সাত মাস ধরে আমার বাড়িতে ভাড়া থাকত। স্বামী এবং এক সন্তানকে নিয়েই থাকত। ভাড়া দেওয়ার দু’মাস পর জানতে পারি মেয়েটির বাইরের একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক আছে।” তাঁর কথায়, ”সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক হয়। এমনকী আমার বাড়িতে ছেলেটা এসে দু’বার রাতে থেকেও গিয়েছে”। তবে এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না বলে দাবি গোবিন্দ চৌধুরীর। তবে মেয়ের বিবাহবর্হিভুত সম্পর্কের কথা বাবা সবটাই জানত বলে দাবি তাঁর।
পুলিশ সূত্রে খবর, আজ মঙ্গলবার ওই মহিলাকে দফায় দফায় জেরা করেছেন পুলিশ আধিকারিকরা। একই সঙ্গে তাঁর স্বামীকে জেরা করেও ঘটনার সূত্রে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন পুলিশ আধিকারিকরা।