সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাণিজ্য করার জন্য ভারত ভালো অংশীদার নয়। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নয়াদিল্লির উপর চাপানো হবে নতুন শুল্ক হার। মঙ্গলবার ভারতকে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এদিন সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “বাণিজ্যের জন্য ভারত ভালো অংশীদার নয়। তারা আমাদের সঙ্গে যথেষ্ট বাণিজ্য করে। কিন্তু আমরা তাদের সঙ্গে বাণিজ্য করি না। তাই ভারতের উপর আমরা ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলাম। কিন্তু আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা বৃদ্ধি করা হবে। কারণ, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনছে এবং তারা ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে রাশিয়াকে সাহায্য করছে।”
সোমবারই ভারতের উপর আরও চড়া শুল্ক চাপানোর হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি তাঁর সোশাল মিডিয়া ট্রুথ সোশালে লেখেন, ‘ভারত রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে তেল কিনছে। সেই তেলের বেশিরভাগই তারা খোলা বাজারে বিক্রি করে মুনাফা কামাচ্ছে। রাশিয়ার লাগাতার হামলার জেরে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের মৃত্যুমিছিলে আদও রুশ ‘বন্ধু’ ভারতের কিছু এসে যায় না। এই কারণেই আমেরিকা ভারতের উপর আরও চড়া হারে শুল্ক আরোপ করবে।’
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরই কড়া প্রতিক্রিয়া দেয় ভারত। বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরুর পর বেশিরভাগ সামগ্রীই ইউরোপমুখী হয়েছিল। তাই রাশিয়া থেকে তেল কেনা শুরু করে ভারত। শুধু তাই নয়, সেই সময় বিশ্বের জ্বালানির বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমেরিকাই রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতকে উৎসাহিত করেছিল।’ আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেভাবে লাগাতার ভারতকে আক্রমণ করে যাচ্ছে, তা ‘অযৌক্তিক’ বলেও আখ্যা দিয়েছে ভারত।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার সঙ্গে বড়সড় বাণিজ্য করেছিল। যার পরিমাণ ছিল ৬৭.৫ বিলিয়ন ইউরো। আবার ২০২৩ সালে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৭.২ বিলিয়ন ইউরো। যা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের থেকে অনেক গুণ বেশি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালে ইউরোপের প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির পরিমাণ পৌঁছে গিয়েছে ১৬.৫ লক্ষ টনে। যা ২০২২ সালের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, আমেরিকাও তাদের প্রয়োজনে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করে। তারা তাদের পারমাণবিক শিল্পের জন্য রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড কেনে। আবার বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পের জন্য প্যালাডিয়াম, সার এবং বিভিন্ন রাসায়নিকও তারা রাশিয়া থেকে আমদানি করে।’ ভারত যে জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই ভবিষ্যতে কাজ করে যাবে, তা-ও ফের একবার স্পষ্ট করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে এবার নতুন শুল্কহারের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ভারতকে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প।