শিলাজিৎ সরকার: বছর চারেক আগে লাল-হলুদ জার্সিতে ভারতীয় ফুটবলে আবির্ভাব হয়েছিল তাঁর। কয়েক মাসে সেই যাত্রা শেষ হলেও এদেশের ফুটবলপ্রেমীদের মনে অমলিন তাঁর পারফরম্যান্স। এমনকী আইএসএলে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে তাঁর করা গোল নিয়ে আজও আলোচনা হয় সমর্থকদের মধ্যে। সেই ব্রাইট এনোবাখারে আবার ফিরেছেন ভারতীয় ফুটবলে। তবে এবার ইস্টবেঙ্গলের হয়ে আইএসএলে নয়, তিনি খেলবেন ডায়মন্ড হারবার এফসি-র জার্সিতে আই লিগে।
ভিসা সমস্যার জন্য ডুরান্ড কাপে খেলতে পারেননি ব্রাইট। তাই পাখির চোখ করছেন আই লিগকেই। বৃহস্পতিবার তিনি বলছিলেন, “আমার লক্ষ্য ডায়মন্ডহারবারকে আইএসএলে তোলা। আগামী বছর দেশের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে দিতে চাই ক্লাবকে।” আর সেই যাত্রাপথে নিজের প্রাক্তন ক্লাবের সমর্থকদেরও পাশে চাইছেন ব্রাইট। তাঁর কথায়, “ইস্টবেঙ্গল আইএসএল খেলবে, ডায়মন্ড হারবার এফসি আই লিগ। তাই লাল-হলুদ সমর্থকরা যদি স্টেডিয়ামে এসে আমাদের সমর্থন করে, তার থেকে ভালো কিছুই হতে পারে না। ঘরের মাঠে যত বেশি সমর্থন পাব, আমাদের জন্য তত ভালো হবে।” ডুরান্ড ফাইনালের দিন কলকাতার অন্য তিন প্রধানের সমর্থকদের পাশে চেয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের বিদেশি ফরোয়ার্ড লুকা মায়সেন। এবার সেই সুরেই প্রাক্তন ক্লাবের সমর্থকদের যেন নিজেদের ম্যাচে মাঠে দেখতে চাইলেন ব্রাইট।
এর আগে ব্রাইট ভারতে এসেছিলেন করোনা-কালে। মুক্তমনে ঘোরাফেরা তো পরের কথা, শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রেও যেন অলিখিত নির্দেশিকা জারি ছিল সেসময়! তাই এবার ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে দেখতে চাইছেন ব্রাইট। নাইজিরিয়ান তারকার কথায়, “আগের বার যখন এসেছিলাম, সময়টা দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। তখন শুধু হোটেল থেকে মাঠে যেতাম, ম্যাচ খেলতে আর প্র্যাকটিস করতে। গণ্ডির বাইরে পা রাখার কোনও সুযোগই ছিল না। এবার কোনও সমস্যা নেই। শুনেছি ভারত খুব সুন্দর দেশ। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া, বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার ইচ্ছা আছে।” ইস্টবেঙ্গলের তৎকালীন স্কোয়াডের দুই সদস্য- গোলকিপার মির্শাদ মিচু এবং মিডফিল্ডার আঙ্গুসানা লুয়াং রয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের স্কোয়াডেও। তাঁদের সঙ্গে খেলার কথা ভোলেননি ব্রাইট। একই সঙ্গে জানালেন, সেই দলের বাঙালি ডিফেন্ডার অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সখ্যের কথা।
বর্তমানে নাইজিরিয়ার নাগরিকদের ক্ষেত্রে ভারতের ভিসা পাওয়ার বিষয়টি বেশ জটিল হয়ে গিয়েছে। তাই ব্রাইট এবং ডায়মন্ড হারবারের আর এক বিদেশি সানডে আফোলাবির এদেশে আসতে দেরি হয়েছে। ডুরান্ড ফাইনালের পরদিন শহরে আসেন তাঁরা। মরশুমের প্রথম প্রতিযোগিতায় নতুন ক্লাবের হয়ে খেলতে না পেরে বেশ হতাশ দু’জনেই। সানডে বলছিলেন, “আমরা ডুরান্ডের আগেই চলে আসতে চেয়েছিলাম। তাতে দলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেশি সময় পেতাম। কিন্তু দূতাবাস থেকে ভিসা দিতে দেরি করায় তা হয়নি।” একই কথা শোনা গিয়েছে ব্রাইটর মুখেও।