অর্ণব দাস, বারাসত: পরিবারকে লুকিয়ে মুর্শিদাবাদের প্রেমিকাকে বিয়ে করেছিলেন। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হতেই উধাও পাত্র। যোগাযোগও রাখছেন না। এমনই অভিযোগে দত্তপুকুরের বাসিন্দা আজাহার উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এমন পরিস্থিতিতে সংসার করার দাবিতে রবিবার থেকে টানা ৪৮ ঘন্টা স্বামীর ফ্ল্যাটের সামনে ধর্নায় বসলেন স্ত্রী জুলেখা খাতুন।
জুলেখার বাড়ি মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার দেবকুণ্ড পঞ্চায়েতের সারুলিয়া ভূষিপাড়া গ্রামে। রেলে কর্মরত আজাহারের সঙ্গে তাঁর বছর পাঁচেক আগে ম্যাট্রিমোনিয়াল ওয়েবসাইটে আলাপ হয়। ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দু’জনে। শেষে প্রায় মাস চারেক আগে আইন মোতাবেক রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করেন তাঁরা। পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করায় বাপের বাড়িতেই থাকছিলেন জুলেখা। এদিকে আজাহার মা, বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে দত্তপুকুর থানার ছোট জাগুলিয়া পঞ্চায়েতের বামনগাছির একটি আবাসনে থাকছিলেন।
মাসখানেক আগে অসুস্থ হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হন জুলেখা। তখনই বিয়ের কথা জানতে পারে দুই পরিবার। অভিযোগ, এরপরই আজহারের পরিবার বেঁকে বসে। তারপর থেকে আজহার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন বলে অভিযোগ। এমন পরিস্থিতিতে রবিবার মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বেলডাঙা থেকে বামনগাছি ছুটে আসেন জুলেখা। স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে সংসার করার দাবিতে স্বামীর ফ্ল্যাটের সামনেই ধর্নায় বসেন তিনি। বিষয়টি জানার পর থেকেই গেটে তালা লাগিয়ে ফ্ল্যাটের ভিতরেই রয়েছেন আজাহারের পরিবার। একবারের জন্যও কেউ বাইরে বের হননি। প্রতিবেশী-সহ পরিচিত কয়েকজন আজাহারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও সমস্যা মেটেনি। ফলে সোমবারও ধর্না চালিয়ে যাচ্ছেন স্ত্রী। পরিবারের অন্যান্যরা বাড়িতে থাকলেও আজহার ফ্ল্যাটে নেই বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর।
জুলেখার কথায়, “চলতি বছরের ৫ এপ্রিল আমাদের রেজিস্ট্রি ম্যারেজ হয়। আমার শরীর খারাপের সময় বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সামাজিকভাবে বিয়ে করার বিষয়ে দুই পরিবারের কথা হয়। তারপর থেকেই এড়িয়ে চলছেন আজাহার। ২৪ জুন শেষবার কথা হয়েছিল। তারপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সেই কারণেই স্বামীর এই ধর্না। মর্যাদার সঙ্গে সংসার করতে চাই।” আজাহারের প্রতিবেশী ফারুক আহমেদ বলেন, “মেয়েটি রেজিস্ট্রি ম্যারেজের প্রমাণপত্র দেখিয়েছে। আজহারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু সুরাহা হয়নি।” আজাহারের পরিবার ফ্ল্যাট বন্ধ করে রাখায় তাদের কারও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।