অর্ণব দাস, বারাসত: ফের ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের। রবিবার সকালে তামিলনাড়ুতে কর্মরত উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা ব্লকের বাসিন্দা হর্ষিত হিরার মৃত্যুর খবর পৌঁছয় পরিবারে। যে সংস্থার অধীনে কাজ করতেন বছর চল্লিশের হর্ষিত, সেখান থেকে মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে স্ট্রোকের কথা। তবে তা মানতে নারাজ পরিবার। সম্প্রতি ভিনরাজ্যের বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর যেভাবে অত্যাচারের খবর মিলছে, তাতে তাঁদের সন্দেহ যে হর্ষিতের সঙ্গেও তেমন কিছু ঘটে থাকতে পারে। তামিলনাড়ু থেকে তাঁর দেহ ফেরাতে তৎপর জেলা প্রশাসন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর আসল কারণ জানার অপেক্ষায় পরিবার।
দেগঙ্গা ব্লকের বেড়াচাঁপা ১ নম্বর পঞ্চায়েতের পূর্ব চ্যাংদানা গ্ৰামের বাসিন্দা বছর চল্লিশের হর্ষিত হিরা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত বছর ১৫ ধরে তিরুচিরাপল্লির এক বেসরকারি সংস্থার অধীনে দিনমজুরের কাজ করতেন তিনি। পরিবারে স্ত্রী ছাড়া তাঁর দুই কন্যাসন্তান আছে। বছর খানেক আগে ছুটিতে শেষবার হর্ষিত দেগঙ্গার গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। রবিবার সকালে পরিবারের কাছে একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তির মৃত্যুর খবর আসে। মৃতের দাদা নবকুমার বলেন, “ওখান থেকে জানানো হল, শনিবার স্ট্রোক হয়ে নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে মৃত্যু হয়েছে ভাইয়ের। সত্যিটা বলতে পারব না, ওখানে যারা আছে, তারাই বলতে পারবে। ও পরিবারের একমাত্র রোজগারে ছিল। বাড়িতে দু’জন সন্তান আছে। সরকার সাহায্য করলে পরিবার বেঁচে যাবে।” এই মৃত্যুর ঘটনায় সংশয় তৈরি হয়েছে পরিবারে। যে সংস্থার অধীনে সে কাজ করত, সেখান থেকে মৃত্যুর কারণ স্ট্রোক জানানো হলেও ময়নাতদন্তে রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত এই তত্ত্ব মানতে নারাজ তারা। কারণ, যেভাবে ভিনরাজ্যে বাঙালিদের উপর অত্যাচারের খবর এখন শিরোনামে, তাতে তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লিতে হর্ষিতের সঙ্গে এমন কিছু হয়েছে কি না, এনিয়ে প্রশ্ন রয়েছে গ্রামবাসীদেরও।
অসহায় এই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে দেগঙ্গা ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, “দলের তরফে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরাই মৃতের পরিবারকে সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। যেভাবে ভিনরাজ্যে বাংলায় কথা বলার জন্য আক্রমণ নেমে আসছে, তাতে হর্ষিত হিরার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।” বিডিও ফাহিম আলম জানিয়েছেন, ”রাজ্য সরকারের তরফে মৃতদেহ আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত হওয়ার পর আশা করা যায়, সোমবার দেহ ফিরিয়ে আনা যাবে।”