সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জমে গিয়েছে লর্ডসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। দ্বিতীয় দিনের শেষে স্পষ্ট নয় শেষ হাসি কে হাসবে। যা আরও একবার প্রমাণ করে দিল, কেন লাল বল-সাদা পোশাকের ক্রিকেটই খেলাটির সবচেয়ে আশ্চর্য সংস্করণ। দিনের শেষে ৮ উইকেটে ১৪৪ অস্ট্রেলিয়া। তারা এগিয়ে সাকুল্যে ২১৮ রানে।
প্রথম দিন অস্ট্রেলিয়া ২১২ রানের বেশি তুলতে পারেনি। মনে করা হচ্ছিল প্রোটিয়ারা দারুণ জায়গায় রয়েছে। কিন্তু দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা পৌঁছয় ৪ উইকেটে ৪৩ রানে। এই পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু হয়। ম্যাচে ফিরতে গেলে দ্বিতীয় দিনের শুরুতে একটা পার্টনারশিপ দরকার ছিল প্রোটিয়াদের। সেই লক্ষ্য নিয়েই নেমেছিলেন বাভুমা এবং বেডিংহ্যাম। তাঁদের জুটিতে উঠল ৬৪ রান। কামিন্সকে পুল করে গ্যালারিতে ফেলেও দেন বাভুমা। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেট টিটোয়েন্টির মতো তাৎক্ষণিকতায় আক্রান্ত নয়। এখানে সব সময়ই সুযোগ থাকে কামব্যাকের। ছটফট করে কভারে ক্যাচ দিয়ে ৩৬ রান করে আউটন বাভুমা। আরেকটু ধৈর্য ধরলে হয়তো আরও ভালো কিছু করতে পারতেন তিনি।
ডেভিড বেডিংহ্যামের (৪৫) ইনিংসও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তাঁকেও ফেরান কামিন্স। এরপর আরও দু’টো উইকেট পড়ে কম সময়ের মধ্যে। কামিন্স সেই সময় রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছেন। তিনি নেন ছয় উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০ উইকেটের মালিকও হন অজি অধিনায়ক। মাত্র ১৩৮ রানে শেষ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। অস্ট্রেলিয়া ৭৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ লিড পায়।
দ্বিতীয় ইনিংসে অজিদের শুরুটা মন্দ হয়নি। দশ ওভারে বিনা উইকেটে ২৮ পেরনোর পরই এক ওভারে খেলা ঘুরিয়ে দেন রাবাডা। খোয়াজা (৬) ফেরার পর দু’বল খেলে কোনও রান না করেই ফেরেন ক্যামেরন গ্রিন। এরপর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তে থাকে। প্রথম ইনিংসে ওয়েবস্টার করেছিলেন ৭২। এবার তাঁর ব্যাট থেকে এল মাত্র ৯। অন্যদিকে আগেরবার ৬৬ করা স্টিভ স্মিথ ফিরলেন ১৩ রানে। ট্রাভিস হেডও (৯) রান পেলেন না।
৭৩ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে ধুঁকতে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে লড়াইয়ে ফেরালেন অ্যালেক্স ক্যারি। মাত্র ৫০ বলে ৪৩ রান করে গেলেন তিনি। দিনের শেষে ২১৮ রানে এগিয়ে থাকা অজিদের হাতে দুই উইকেট। শেষপর্যন্ত তারা কোনওভাবে আড়াইশো পেরলে প্রোটিয়াদের কাজটা আরও কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু সেটা না হলেও এই লো-স্কোরিং ম্যাচে তারা জয়ের রান তুলে ফেলবে এমনটা বলা কঠিন। আবার অস্ট্রেলিয়াও যে শেষ হাসি হাসবেও তা বলা কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে কে জিতবে তা জানতে তৃতীয় দিনের দিকেই চোখ থাকবে সকলের। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের শেষেই যে ক্রিকেটের সবচেয়ে আদিম সংস্করণ নিজের জয় ঘোষণা করে দিয়েছে তা বলাই যায়।