অপারেশন সিঁদুরকে ‘স্যালুট’, উচ্ছ্বসিত কার্গিল যুদ্ধে অংশ নেওয়া গোবরডাঙার জওয়ান সত্যজিৎ

অপারেশন সিঁদুরকে ‘স্যালুট’, উচ্ছ্বসিত কার্গিল যুদ্ধে অংশ নেওয়া গোবরডাঙার জওয়ান সত্যজিৎ

স্বাস্থ্য/HEALTH
Spread the love


অর্ণব দাস, বারাসত: অপারেশন সিঁদুরকে কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা ভারতবর্ষ। বৃহস্পতিবার মাঝরাত পর্যন্ত টিভির পর্দায় পাকিস্তানের ছোড়া এক একটি মিসাইল, ড্রোনকে আকাশেই ধ্বংস করতে দেখে সেনাবাহিনীর প্রতি ভরসা আরও বেড়েছে দেশবাসীর। পাশাপাশি তিনবাহিনীর স্থল, জল, আকাশ পথে পালটা প্রত্যাঘাতে সন্ত্রাসবাদের আতুরঘর পাকিস্তানের ১৬টি শহরের ধ্বংসের খবরের উচ্ছ্বসিত হয়েছেন দেশের প্রতিটি মানুষ। সেনাবাহিনীর এই জয়গাথাকে স্যালুট জানিয়ে অপারেশন বিজয়ের স্মৃতিচারণ করলেন গোবরডাঙার খাটুরা চক্রবর্তীনাথ এলাকার বাসিন্দা প্রাক্তন সেনা সত্যজিৎ দে।

১৯৯৯ সালের মে মাস থেকে জুলাইয়ের প্রায় শেষ পর্যন্ত চলা কার্গিল যুদ্ধে তিনি ‘৯ প্যারা এসএফ’এর হাবিলদার পদে অংশ নিয়েছিলেন। শুক্রবার ফোনে সেই অভিজ্ঞতাই তিনি ভাগ করে নিলেন সংবাদ প্রতিদিনের সঙ্গে।

বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মী সত্যজিৎবাবু অপারেশন বিজয় একমাস যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলেন। তাদের ৩০ সদস্যের ইউনিটের টার্গেট ছিল স্যান্ডো-টপ দখল ও নিয়ন্ত্রণ করা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য কার্গিল যুদ্ধের এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, স্যান্ডো-টপ থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে পাকিস্তানের অবস্থান এবং কার্যকলাপ দেখা যেত। যার উচ্চতা প্রায় ১৮ হাজার ফুট। পথ অত্যন্ত দুর্গম। এই স্যান্ডো-টপ দখল নিতে তাদের অস্ত্র ছিল এলএমজি, এমএমজি, রকেট লঞ্চার, স্নাইপার এবং একে৪৭। ব্যাকআপের জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকতো বো-ফোর্স কামান, সঙ্গে বায়ুসেনার সহযোগিতা।

৩০ জন সদস্যকেই ঘুমোতে হত রিলে করে, কাছে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে। সময় মিলত খুব বেশি হলে ১০ মিনিট। রান্না করতে হত নিজেদেরই। তবে, রাতে আগুন জ্বালালে বা দিনের বেলায় ধোঁয়া বেরোলে শত্রুপক্ষের নজরে আসতে পারে এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হত। তাই ড্রাই-ফুডই ছিল তাঁদের মূল ভরসা। এমন একটা সময় এসেছিল যখন তাদের নালার নোংরা জল ছেকে খেতে হয়েছিল। শুধু শত্রুপক্ষের সঙ্গে লড়াই নয়, প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা, পরিবেশ, পরিস্থিতির সঙ্গেও তাঁদের এই লড়াইয়ের মূল মন্ত্র ছিল দেশপ্রেম। তাই তো স্যান্ডো-টপ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর উচ্ছ্বাসে, আনন্দে তিনদিন ঘুমোতে পারেননি এই বীরেরা।

সত্যজিৎবাবুর কথায়, “যুদ্ধের সময় আমাদের মগজে একটা জিনিসই থাকে, আমরা ভারত মায়ের সন্তান। তখন আমাদের মাথায় থাকে না বাড়িতে মা, বাবা, ভাই, বোন পরিবার আছে। দেশ ছাড়া আমরা তখন আর কিছুই চিনি না। একই বিষয় এখন অপারেশন সিঁদুরে অংশ নেওয়া প্রতিটি সেনার রয়েছে। তাই তাদের কেউ লক্ষ্য থেকে টলাতে পারবে না। আর ভারতীয় সেনার সবথেকে বড় ব্যাপার হল, আমাদের কাছে খোলা নির্দেশ থাকে। শত্রু সামনে থাকলে নিকেশ করতে হবে, ব্যস।”



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *