সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের আগুনে জল ঢেলে এবার আফিকায় বড় পদক্ষেপ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আফ্রিকায় দীর্ঘ বছর ধরে যুযুধান দুই দেশ রোয়ান্ডা ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক কঙ্গোর (DRC) মধ্যে হতে চলেছে শান্তিচুক্তি। শুক্রবারই ওয়াশিংটনে এই শান্তিচুক্তিতে সাক্ষর করতে করতে চলেছেন এই দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। আফ্রিকা মহাদেশে অশান্তি মেটাতে এই শান্তিযুক্তি যে বিরাট পদক্ষেপ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও অভিযোগ উঠছে, কঙ্গোর খনিজ সম্পদের দিকে নজর আমেরিকার। চিনকে টক্কর দিয়ে সেই লাভের গুড় খেতে এই চুক্তিতে এত আগ্রহী ট্রাম্প।
নব্বইয়ের দশক থেকে যুদ্ধে লিপ্ত আফ্রিকার দুই দেশ ডি আর কঙ্গো ও রোয়ান্ডা। ২০২১ সাল থেকে তা ভয়াবহ আকার নেয় দুই দেশের সংঘাতের জেরে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এখানে। অভিযোগ, এম-২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে কঙ্গোকে রক্তাক্ত করে তুলেছে রোয়ান্ডা। চলতি বছরের শুরুর দিকে এম-২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী ডি আর কঙ্গোর গোমা-সহ বড় অঞ্চলের দখল নেয়। ডি আর কঙ্গো সরকারের অভিযোগ এম-২৩ গোষ্ঠীর বেশিরভাগ সদস্য তুতসি সম্প্রদায়ের। যারা রোয়ান্ডা থেকে সরাসরি সামরিক সাহায্য পায়। অন্যদিকে, হুটু বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক ও আর্থিক মদতের অভিযোগ ডি আর কঙ্গোর বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই শুক্রবার শান্তিচুক্তি করতে চলেছেন রোয়ান্ডা ও ডি আর কঙ্গো এই দুই দেশের বিদেশমন্ত্রী। এই চুক্তির মধ্যস্থতা করবেন মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও।
চুক্তি সাক্ষরের আগে তিন রাষ্ট্রপ্রধান যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশ নিজেদের মধ্যেকার শত্রুতা বন্ধ করার পাশাপাশি একে অপরের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে। একইসঙ্গে নিজ নিজ দেশে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিকে নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে কাজ করবে। দুই দেশ একে অপরের আর্থিক উন্নতির লক্ষ্যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে বলেও জানানো হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রোয়ান্ডা প্রেসিডেন্ট পল কাগামে ও কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদির মধ্যে বৈঠক হওয়ারও কথা রয়েছে।
এদিকে চুক্তির নেপথ্যে আমেরিকার বিরাট স্বার্থ রয়েছে বলে দাবি কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। ডি আর কঙ্গো খনিজ সম্পদে পূর্ণ একটি দেশ। এখানে যে খনিজ সম্পদ পাওয়া যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য লিথিয়াম ও কোবাল্ট। আমেরিকা চায় কঙ্গোতে বিনিয়োগ করতে। সেই লক্ষ্যে একটি চুক্তিও হতে পারে দুই দেশের। অন্যদিকে, অবৈধ অভিবাসীদের আমেরিকা থেকে তাড়িয়ে রোয়ান্ডাতে জায়গা দিতে আগ্রহী ট্রাম্প। এই চুক্তির মাধ্যমে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজের আখের গোছাবে আমেরিকা।