অন্তঃসত্ত্বার মোবাইল আসক্তিতে শিশুর অটিজম! প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য

অন্তঃসত্ত্বার মোবাইল আসক্তিতে শিশুর অটিজম! প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য

বৈশিষ্ট্যযুক্ত/FEATURED
Spread the love


অভিরূপ দাস: মোবাইলে অত্যাধিক আসক্তির আরেক মারাত্মক কুফল প্রকাশ্যে। মায়ের জঠরে শিশুর স্নায়ুকোষের বিকাশ হয়। অন্তঃসত্ত্বার অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার সেখানে আঘাত হানছে। হবু মায়ের অতিরিক্ত মোবাইলের নেশায় অটিজম ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হতে পারে শিশু! সাম্প্রতিককালে বিহারের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের এই সন্দেহে সিলমোহর দিলেন বাংলার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা।

বছরখানেক আগে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, যে সমস্ত শিশুর মধ্যে আচরণগত সমস্যা দেখা যাচ্ছে তাদের মায়েদের সঙ্গে কথা বলে প্রমাণ মিলেছে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তারা অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করতেন। বর্তমানে অটিজম বাড়ছে বাংলায়ও। প্রতি ৬৮ জনের মধ্যে একজন আক্রান্ত অটিজম ডিজঅর্ডারে। এ অসুখে শিশু চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারে না। বুঝতে পারে না অনুভূতি। কথা বলতে শুরু করতে অনেক দেরি হয়ে যায়।

এর নেপথ্যে কারণ কী? কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. মিহির সরকার জানিয়েছেন, মাথায় রাখতে হবে অটিজম একধরনের নিউরো ডেভলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার। মায়ের পেটেই শিশুর এই নিউরোন বা স্নায়ুকোষ তৈরি হয়। সেই অবস্থায় মা যদি অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার করেন তবে তা প্রভাব ফেলতে পারে স্নায়ুকোষের গঠনে। মায়ের জঠরে শিশুর স্নায়ুকোষের বিকাশ একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। মায়ের গর্ভধারণের প্রায় তিন সপ্তাহ পর গঠিত হয় শিশুর নিউরাল টিউব। পরবর্তীকালে যা মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের রূপ নেয়। এই নিউরাল টিউব থেকেই নিউরোন বা স্নায়ুকোষ তৈরি হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মা সন্তানসম্ভবা হওয়ার ৬ থেকে ২০ সপ্তাহ পর এই নিউরোনগুলো জঠরে থাকা শিশুর মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে। এই কোষ মস্তিষ্ক গঠনে সহায়তা করে। এরপর মায়ের পেটেই শিশুর স্নায়ুকোষ একে অপরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে। এই সংযোগ যত ভালো হবে পরবর্তীকালে শিশুর অনুভূতি ও চিন্তাশক্তি তত প্রবল হয়।

চিকিৎসকদের আশঙ্কা, পুরো প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে অন্তঃসত্ত্বার অতিরিক্ত মোবাইলের নেশা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. কল্পনা দত্ত জানিয়েছেন, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মা-কে জোরে জোরে কবিতা পড়তে বলা হয়। সরকারি হাসপাতালে আসা সদ্য মায়েদেরও আমরা বলি কবিতা পড়ো, গল্পের বই পড়ো। মোবাইল থেকে দূরে থাকো। সারাক্ষণ স্মার্ট ফোন ব্যবহারের সবচেয়ে ভয়ংকর দিক তুলে ধরেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।

ডা. কল্পনা দত্তর বক্তব্য, “মোবাইলের স্ক্রিনের ব্লু লাইট মেলাটোনিন সিক্রিয়েশন কমিয়ে দেয়। এতে অন্তঃসত্ত্বার সঠিক ঘুম হয় না। মাথায় রাখতে হবে এই মেলাটোনিন স্লিপ হরমোন।” কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ডা. মিহির সরকার জানিয়েছেন, এখন অত্যাধুনিক টেস্টের মাধ্যমে অটিজম নির্ণয় করা যাচ্ছে। যে কারণে অসুখ শনাক্ত করা যাচ্ছে। তবে সেটাই অটিজম ডিজঅর্ডার বৃদ্ধি পাওয়ার আসল কারণ নয়। জঠরে শিশু থাকা অবস্থায় মা যদি গল্প করেন, গান শোনেন, ভালো বই পড়েন সেক্ষেত্রে শিশুরও নিউরোন বা স্নায়ুকোষের গঠন ঠিকঠাক হয়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *