সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হস্টেলের খাবারে মৃত ব্যাঙের পর এবার অঙ্গনওয়াড়িতে শিশুদের জন্য তৈরি ডালে পোকা! যার জেরে বিতর্কে বিজেপির মধ্যপ্রদেশের ডবল ইঞ্জিন সরকার। কয়েকদিন আগেই জগতপুরায় একটি হস্টেলের খাবারে সবজিতে একটি মৃত ব্যাঙ পাওয়া যায়। যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। ফের ঘটল এমনই ঘটনা। সম্প্রতি শিবপুরী জেলায় একটি অঙ্গনওয়াড়িতে শিশুদের ডালে পোকা ভাসতে দেখেন অভিভাবকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
হতবাক মায়েরা অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের সন্তানদের জীবনের সঙ্গে খেলা করা হচ্ছে?” পরিবেশককে প্রশ্ন করলে তিনি পালিয়ে যান। স্থানীয় কর্মকর্তারা অভিভাবকদের ক্ষোভ মেটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এবার অভিযোগ উঠছে, অঙ্গনওয়াড়িতে যে খাবার তৈরি হয় তা শিশুদের জন্য। সেই খাবারেই যদি পোকা থাকে তাহলে উপায় কী! ওই খাবার খেয়ে কোনও শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে দায় কে নিত?
মহিলা ও শিশু উন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিক এস. শেখরন স্বীকার করে নিয়েছেন যে ডালে পোকা পাওয়া গিয়েছে। তিনি জানান, নোটিস দেওয়া হয়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি তিনি সাফ জানাচ্ছেন “অন্য কোনও অঙ্গনওয়াড়ি থেকে অভিযোগ আসেনি”। যদিও এই ধরণের সাফাইয়ের কোনও মানেই হয় না। কারণ, অপুষ্টিতে শিশুদের মৃত্যুর খবরে বারবারই সামনে আসে মধ্যপ্রদেশের নাম।
সাম্প্রতিককালে মধ্যপ্রদেশে একের পর এক শিশুর অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে। কিছুদিন আগেই সরকারি দস্তক অভিযানের সময় ১৫ মাসের এক শিশু মারা যায়। ৩ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজনের শিশুটির রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ সাংঘাতিক মাত্রায় কমে গিয়েছিল বলেই জানা যাচ্ছে। তার কয়েকদিন আগে দেড় বছরের এক আদিবাসী শিশুর মৃত্যু হয়। যার ওজন ছিল মাত্র আড়াই কেজি। গত জুলাইয়ে লাহার সিভিল হাসপাতালে একটি শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। যদিও সেই মৃত্যুকে অপুষ্টির কারণ বলে মানতে চাননি।
শিশু অপুষ্টির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে রয়ে গিয়েছে মধ্য়প্রদেশে। যেখানে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার। রাজ্যে প্রায় ১০ লক্ষ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে, এর মধ্যে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার শিশু গুরুতরভাবে অসুস্থ। ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত ৮৫ হাজার ৩৩০ জন শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে উপজাতি অধ্যুষিত ব্লকের পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে। বার্ষিক ভর্তির সংখ্যা ২০২০-২১ সালে ১১ হাজার ৫৬৬ থেকে বেড়ে ২০২৪-২৫ সালে পৌঁছেছে ২০ হাজার ৭৪১ তে।