অগ্নিগর্ভ নেপাল! ‘গদি হারালেও সোশাল মিডিয়া থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলব না’, সাফ জানালেন প্রধানমন্ত্রী ওলি

অগ্নিগর্ভ নেপাল! ‘গদি হারালেও সোশাল মিডিয়া থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলব না’, সাফ জানালেন প্রধানমন্ত্রী ওলি

স্বাস্থ্য/HEALTH
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোশাল মিডিয়ে ইস্যুতে অগ্নিগর্ভ নেপাল। পুলিশ-নিরাপত্তারক্ষী সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২৫০ জন। বিরোধীদের চাপে ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। এই পরিস্থিতিতে নিজের অবস্থানে অনড় নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, গদি হারালেও সোশাল মিডিয়া থেকে নিষেধাজ্ঞা তিনি তুলবেন না।

সোমবার উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সূত্রের খবর, দেশে শান্তি ফেরাতে বৈঠকে নেপালের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা মন্ত্রী প্রদীপ পাউডেল সোশাল মিডিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ওলি সাফ জানিয়ে দেন, সরকারের সিদ্ধান্ত সঠিক। তাই পুনর্বিবেচনার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।

নেপালের কেপি শর্মা ওলি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগ ছিলই। সম্প্রতি সেদেশে ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স-সহ প্রায় সব ধরনের সোশাল মিডিয়া নিষিদ্ধ হওয়ায় আগুনে ঘি পড়েছে। প্রতিবাদ আন্দোলনে নেমেছে সেদেশের তরুণ প্রজন্ম। রাস্তায় নেমে কেপি শর্মা ওলি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাচ্ছে তাঁরা। এমনকী একদল উত্তেজিত জনতা সংসদ ভবনের ভিতরে ঢুকে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের হটাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঠমান্ডুতে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন।

কাঠমান্ডুর পরে বীরগঞ্জ, ভৈরহাওয়া, বুটওয়াল, পোখরা, ইটাহারি এবং দামকে কারফিউ জারি হয়েছে। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ। স্থগিত হয়েছে পরীক্ষা। রাজনৈতিক দলগুলির দপ্তরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন কার হয়েছে। দেশটির বর্তমান পরিস্থিতিতে শান্তি ফেরাতে সব দলকে একজোট হয়ে কাজ করার পরিমর্শ দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।

গত ৪ সেপ্টেম্বর নেপালে নিষিদ্ধ হয় ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স-সহ প্রায় সব ধরনের সোশাল মিডিয়া। সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নেপাল প্রশাসনের সঙ্গে সরকারি ভাবে নথিবদ্ধ হয়নি। সাতদিনের ডেডলাইন দিলেও তা মেনে চলেনি ২৬টি সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের একটিও। তাই এই কড়া সিদ্ধান্ত নেয় কাঠমান্ডু সরকার। এমন সিদ্ধান্তেই বেজয় ক্ষেপেছে নেপালের ‘জেন জি’। সোমবার হাজার হাজার প্রতিবাদী কাঠমান্ডুর রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছে। সংসদ ভবন-সহ বহু প্রশাসনিক এলাকায়, যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ, সেখানেও ঢুকে পড়েন প্রতিবাদী তরুণ তুর্কিরা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে তাঁরা। এরপরেই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। শেষ পর্যন্ত আন্দোলন রুখতে রাজধানী শহরে কারফিউ জারি করে প্রশাসন, নামানো হয় সেনা। জলকামান ব্যবহার করা হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে।

নেপালে নিষিদ্ধ সোশাল মিডিয়ার তালিকায় রয়েছে ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এক্স, লিঙ্কডইন, রেডিট, হোয়াটসঅ্যাপ, স্ন্যাপচ্যাট ইত্যাদি রয়েছে। নেপালের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, সমস্ত দেশীয় ও বিদেশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিকে আগে সরকারের সঙ্গে নথিবদ্ধ হতে হবে। যাতে সমস্ত ‘অবাঞ্ছিত’ কনটেন্টে নজরদারি চালানো যায় উল্লেখ্য, সোশাল মিডিয়া নিয়ে সমস্যা নেপালে নতুন নয়। ২০২০ সাল থেকে বহু পিটিশন জমা পড়েছে লাইসেন্সহীন প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন ও কনটেন্ট প্রচার করার অভিযোগে। অবশেষে পদক্ষেপ করল প্রশাসন। তবে সব সোশাল মিডিয়াই যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তা নয়। টিকটক, ভাইবার, উইটক, নিমবুজ, টেলিগ্রাম ও গ্লোবাল ডায়রিকে নিষিদ্ধ করা হয়নি।

যদিও বিরোধী দলগুলির দাবি, এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রয়েছে অন্য উদ্দেশ্য। বিরোধীরা যেন কোনওভাবেই এই সব মঞ্চকে ব্যবহার করে প্রতিবাদ না জানাতে পারে তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত যে বিল পেশ করা হয়েছে তাকে ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। একে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও নিজস্ব মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার প্রয়াস বলেই দাবি করা হচ্ছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ






Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *