রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: হাতে সিগারেট ধরিয়ে শুধু মার্কসবাদ-লেনিনবাদ বুঝিয়ে যাওয়ার মধ্যেই নেতাদের সীমাবদ্ধ থাকলে আর হবে না। এবার ‘মাল্টিট্যালেন্ট’ নেতৃত্ব চাইছে আলিমুদ্দিন। কেউ ভালো বক্তা, কিন্তু সংগঠন চালানোর দক্ষতা নেই। আবার কেউ দক্ষ সংগঠক, কিন্তু ভালো বক্তা নন, পারদর্শী নন সোশাল মিডিয়ায়। কেউ আবার পার্টির কাজ করলেও কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা নেই। এরকম হলে চলবে না। সবদিক দিয়ে পারদর্শী হতে হবে, একসঙ্গে একাধিক বিষয়ে দক্ষ হতে হবে নেতৃত্বকে, এমনই দাবি রাজ্য সিপিএমের।
বাংলায় শূন্যের গেরো কাটাতেই ছাব্বিশের ভোটের আগে বহুমুখী প্রতিভা রয়েছে এরকম নেতাদের সিপিএম তুলে আনতে চাইছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সিপিএম তাদের পার্টির চিঠিতে বলছে, পার্টি নেতৃত্বকে সর্বক্ষেত্রে উদাহরণ স্থাপন করতে হবে। বহু কাজ একসঙ্গে করার যোগ্যতা প্রতিটি পার্টি সদস্যের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে। আর এক্ষেত্রেই উঠে এসেছে পার্টি সদস্যদের গুণগত মানোন্নয়নের বিষয়টি। ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ১৪ বছর রাজ্যের মসনদে না থাকলেও সার্বিক এই বিষয়গুলিতে যে এখনও ঘাটতি রয়েছে, তা কার্যত মেনে নিচ্ছে বঙ্গ সিপিএম। বলা হচ্ছে, সর্বস্তরের নেতৃত্বকেই নেতৃত্ব দানের দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
পাশাপাশি সাংগঠনিক কাঠামোয় পার্টির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর হল শাখা। আর শক্তিশালী শাখা সংগঠন সিপিএমের আর নেই। শাখার সদস্যরা থাকলেও সেরকম কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায় না কমরেডদের। পাশাপাশি দক্ষ শাখা সম্পাদকের অভাব রয়েছে বলেও পার্টি চিঠিতে কার্যত স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।
সামনেই ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচন। জেলাভিত্তিক সাংগঠনিক রিপোর্ট আলিমুদ্দিনে আসছে। ‘মাল্টিট্যালেন্ট’ নেতৃত্ব গড়ে তোলার মধ্যেও আবার পার্টির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে দলের কয়েকজন কর্মীর আচরণ নিয়ে। সুশান্ত ঘোষ, বংশগোপাল চৌধুরীদের বিরুদ্ধে মহিলাঘটিত অভিযোগ জমা পড়ায় পার্টি ব্যবস্থাও নিয়েছে। সম্প্রতি আবার এসএফআইয়ের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের বিরুদ্ধে দলেরই এক নেত্রী যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেছেন। তা নিয়েও শোরগোল চলছে সিপিএমে। কাজেই পার্টি সদস্যদের সার্বিক মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও বেশি করে মনোযোগী হতে চাইছে বঙ্গ সিপিএম।