সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যুদ্ধ বাঁধলেই হাজির হন তিনি। বাণিজ্য বন্ধের অস্ত্র হাতে হয়ে ওঠেন ‘শান্তির দূত’। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। শিবমন্দিরকে কেন্দ্র করে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মারণ যুদ্ধে ৩৩ জনের প্রাণহানির পর এবার ময়দানে নামলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হাতে তাঁর বাণিজ্যের তরবারি। দুই দেশের রাষ্ট্র নেতার সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর হুঁশিয়ারি দিলেন, যতদিন না দুই দেশ যুদ্ধ থামাচ্ছে ততদিন দুই দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করবে না আমেরিকা।
সম্প্রতি স্কটল্যান্ড সফরে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখান থেকে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সোশাল মিডিয়ায় সে বার্তা দিয়ে ট্রাম্প লেখেন, ‘থাইল্যান্ডের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করতে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি।’ এরপর আরও একটি পোস্টে লেখেন, ‘থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হল কম্বোডিয়ার যুদ্ধবিরতির বার্তা তাঁকে জানিয়েছি। থাইল্যান্ডও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি চায়। আমি এখন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাব। উভয়ের সঙ্গে কথা বলার পর আশা করছি এই যুদ্ধ পিছনে ফেলে ওই অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসবে। দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতি ও শান্তির জন্য প্রস্তুত। তারা আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য ইস্যুতে আলোচনার টেবিলে আসতে চায়। তবে যতক্ষণ না দুই দেশ পূর্ণ শান্তির পথে হাঁটছে ততদিন কোনও বাণিজ্য হবে না। সমস্যা মিটবে মেটার পর আমরা উভয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করব।’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষের জেরে কার্যত রক্তস্রোত বইছে ম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডে। তিনদিন গোলাবর্ষণের পর অবশেষে শনিবার থাইল্যান্ডের কাছে যুদ্ধ থামানোর আর্জি জানাল কম্বোডিয়া। যদিও সে প্রস্তাব কানে তোলেনি থাইল্যান্ড। এই সংঘর্ষের কারণ ‘এমারেলড ত্রিকোণে’ অবস্থিত একটি শিবমন্দির। দুই দেশই ওই মন্দির ও সংলগ্ন এলাকাকে নিজেদের বলে দাবি করে। ওই মন্দিরগুলিকে নিয়ে সংবেদনশীল তিন দেশের সাধারণ মানুষেরা। এলাকাটির দখল নিয়ে বছর পনেরো আগেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে। নতুন করে গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে সীমান্ত অঞ্চলে গোলাগুলি চলে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাদের মধ্যে। এরপরেই এফ ১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে কম্বোডিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামলা চালায় থাই সেনা।
ভয়াবহ এই যুদ্ধের মাঝেই এবার চেনা ছকে শান্তির দূত হয়ে মাঠে নামলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। উল্লেখ্য, এর আগে ইজরায়েল ও ইরান, কঙ্গো ও রাওয়ান্ডার মধ্যে যুদ্ধ থামানোর দাবি করেছে আমেরিকা। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতিতেও একই দাবি করেছিলেন ট্রাম্প। যদিও সে দাবি স্পষ্ট খারিজ করে দেওয়া হয় ভারতের তরফে। শান্তির নোবেলের দৌড়ে নিজেকে এগিয়ে রাখতে কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড যুদ্ধ থামাতে বাণিজ্য অস্ত্র হাতে শান্তির দূত হয়ে মাঠে নামলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।