সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পবিত্র মঠের মধ্যে মহিলাকে এনে যৌনসঙ্গম বৌদ্ধ ভিক্ষুদের। ঘটনার পর মহিলার দ্বারা ব্ল্যাক মেলের শিকার হয়ে দফায় দফায় দেওয়া হল ১২ মিলিয়ন ডলার। তাও আবার মঠের তহবিল থেকে। এই যৌনকেচ্ছা ও দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল শুরু হয়েছে থাইল্যান্ডে। গোটা ঘটনায় ১১ জন ভিক্ষুকের বিরুদ্ধে উঠেছে অভিযোগের আঙুল।
পুলিশের তরফে জানা যাচ্ছে, মিসেস গলফ নামে থাইল্যান্ডের এক মহিলা মঠের মধ্যে অন্তত ৯ জন ভিক্ষুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করেছিলেন। সেই সময় গোটা ঘটনা ক্যামেরা বন্দি করেন মহিলা। সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আনার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেল শুরু করেন। সম্মানহানির ভয়ে এরপর ওই মহিলাকে প্রতিমাসে বিপুল পরিমাণ টাকা পাঠানো শুরু করেন ভিক্ষুকরা। এভাবে মঠ তহবিলে দান হিসেবে আসা প্রায় এক কোটি ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয় মহিলাকে। বিষয়টি জানাজানি হতেই শুরু হয়েছে তদন্ত। পুলিশের দাবি গোটা ঘটনার তদন্তে গঠন করা হয়েছে টাস্কফোর্স।
পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর আকার নিয়েছে যে থাইল্যান্ডের রাজা তাঁর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের আমন্ত্রণ বাতিল করেছেন। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, এই অনুষ্ঠানে তাঁদের উপস্থিতি একেবারেই কাম্য নয়। এর ফলে জনগণের আস্থায় আঘাত লাগবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জাতীয় বৌদ্ধমঠের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনায় অভিযুক্ত সকল ভিক্ষুকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডে জনজাতির একটি বড় অংশের মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বি। রেওয়াজ অনুযায়ী, বৌদ্ধদের আজীবন পালন করতে হয় ব্রহ্মচর্য। গোটা জীবন কাটাতে হয় ভিক্ষা ও ভাতার মাধ্যমে। সেখানে এই ধরনের ঘটনা সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত তো বটেই বড়সড় অপরাধ বলে মনে করছেন থাইল্যান্ডের জনতা।
এদিকে গোটা ঘটনায় মুখ খুলেছেন এই কেলেঙ্কারির নেপথ্যে থাকা মহিলা মিসেস গলফ। তিনি টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, তিনি সন্ন্যাসীদের দেওয়া অর্থে প্রতিদিন ৯০ হাজার ডলার পর্যন্ত কেনাকাটা করেছেন। স্কুল-হাসপাতালেও দান করেছেন। তাঁর দাবি মঠে দান করার চেয়ে ওখানে দান করা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। অবশ্য এই ধরনের কেলেঙ্কারির ঘটনা এই প্রথমবার নয়, এর আগে খ্রিস্ট ধর্মের ভুল খাসতালুক ভ্যাটিকানে একইরকম ঘটনা সামনে এসেছিল। ২০১৭ সালে ভ্যাটিকানে পোপের ঘরের খুব কাছেই চলে উত্তাল যৌনতা। দনের পর দিন ড্রাগের নেশায় সমকামিতায় লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ ওঠে বহু পুরুষের বিরুদ্ধে। যাকে রীতিমতো সেক্স ব়্যাকেট বললেও ভুল বলা হয় না। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পদক্ষেপও করে কর্তৃপক্ষ।