স্টাফ রিপোর্টার: বরাত এসেছিল নেপাল থেকে, শান্তির প্রতীক বুদ্ধমূর্তি তৈরির। সময়ের আগেই শেষ হয়েছে কাজ। কিন্তু মূর্তি নেবে কে? কোশি নদীর ধারের দেশ যে এই মূহূর্তে জ্বলছে। সংসদ ভবনে আগুন। দেশের সাংসদ-মন্ত্রীদের বাড়ি ভাঙচূর। গোটা নেপালজুড়ে কার্ফু। পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। বিগত ৭২ ঘণ্টার একের পর এক অশান্ত ছবিতে স্পষ্ট, এই মুহূর্তে নেপাল জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির মতো ফুটছে।
৮২৪ কিলোমিটার দূরের সে ছবি টিভিতে দেখে মাথায় হাত মধ্য কলকাতার গিরিশ পার্ক ডোমপাড়ার মৃৎশিল্পী সজল পাত্রের। তাঁদের ঘরে যে নেপালের অর্ডারি মূর্তি পড়ে রয়েছে এই মুহূর্তে! বাংলার কুমোরদের হাতের কাজের সুনাম ছড়িয়ে পৃথিবীজুড়ে। নেপালের অলিতেগলিতেও সেই খবর কমবেশি সকলেই জানেন। নিয়মিত কলকাতায় বরাত আসে নেপালি প্যাগোডায় বুদ্ধমূর্তি তৈরির। তেমনই বরাত এসেছিল শিল্পী সজল পাত্রের কাছে। গত জুলাই মাসের এক দুপুরে গিরিশ পার্কের ডোমপাড়ায় এসেছিলেন জনা চারেক নেপালি। ১৮ ফুটের বুদ্ধমূর্তির বরাত দিয়ে গিয়েছিলেন। আজ বুধবার তাঁদের সেই মূর্তি নেওয়ার কথা। মূর্তি তৈরি হিয়ে গিয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। কিন্তু কীভাবে মূর্তি নেপালে যাবে? আদৌ যাবে কিনা, তাও এখন বুঝতে পারছেন না শিল্পী।
মৃৎশিল্পী সজল পাত্রর কথায়, ‘‘সকাল থেকেই মাথায় ঘুরছিল রাতের মধ্যে সব কাজ শেষ করে তৈরি রাখতে হবে। সবে টিভিটা খুলেছি। যা দেখলাম তাতে ভিরমি খাওয়ার জোগাড়।’’ জেন জি-র আন্দোলনে এই মুহূর্তে নেপাল অগ্নিগর্ভ। নেপালের সঙ্গে ভারতের প্রায় ১,৭৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত। যার মধ্যে অনেকটা রয়েছে বাংলার উত্তরবঙ্গেও। নেপালের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পাঁচ রাজ্যেই সীমান্তে তৎপরতা বেড়েছে। পাহারা কড়া হয়েছে। এমতাবস্থায় নেপাল থেকে মূর্তি নিতে লোক কলকাতায় আসবেন! এমনটা ভাবা আকাশকুসুম। সজল পাত্রর কথায়, ‘‘৪৫ হাজার টাকা দাম এই মূর্তির। দ্রুত শান্তি ফিরুক পড়শি দেশে। যাঁরা অর্ডার দিয়েছিলেন তাঁরা দ্রুত এসে নিয়ে যাক। মূর্তি রাখা অসম্ভব।’’ পুজোর আগে টাকা না পেলে আর্থিকভাবেও সমস্যায় পড়বেন শিল্পী। পরিস্থিতি নিয়ে তিনি এখন দুশ্চিন্তায়।