অর্ণব দাস, বারাকপুর: বরানগরের সোনার দোকানে ডাকাতি ও স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় প্রথম থেকেই নজরে ‘গোল্ডেন ডাকু’ সুবোধ সিংয়ের গ্যাং। তাঁর টিমের ডাকাতির কিছু ‘সিগনেচার স্টাইল’ থাকে। যেমন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ভয় দেখিয়ে সময় নষ্ট না করে খুব বেশি হলে ১০মিনিটের মধ্যে মিশন কমপ্লিট করা। তবে জানা যাচ্ছে, এগুলোর কোনওটাই ‘ফলো’ হয়নি এক্ষেত্রে। সোনার দোকানে থাকা ভারী লোহার দণ্ড ব্যবহার করেই মাথায় আঘাত করা হয়েছিল ষাটোর্ধ স্বর্ণ ব্যবসায়ী শংকর জানাকে। দোকান থেকেই সেটি উদ্ধার হয়েছে। হামলার শুরুতেই ব্যবহার করা হয়েছিল লঙ্কার গুঁড়ো! ক্রেতা সেজে ঠিক যেই সময়ে দুষ্কৃতীরা এসেছিল তখন অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকে। শংকর জানাও সাধারণত সেই সময় দোকান বন্ধ করেন, আবার বিকেল ৫টার পর খোলেন। তাই পরিচিত কেউ এরসঙ্গে জড়িত রয়েছে বলেই সন্দেহ পুলিশ ও ব্যবসায়ী মহলে।
এনিয়ে সিঁথি বঙ্গীয় স্বর্ণ শিল্পী সমিতির সম্পাদক আলোক কুমার দে বলেন, “শংকরবাবুর ছেলে যে দিল্লিতে আছে, সেটা আততায়ীরা জানতো। তাই এই দিনটি বেছে নেয়। আমাদের ধারণা পরিচিত কেউ ছিল। নাহলে দোকান বন্ধের সময় কেন দোকান খুলে রাখবে!” তাই পুলিশের অনুমান, আগেও হামলাকারীরা রেইকি করতে ক্রেতা সেজেই এসেছিল। তখনই হয়ত মোটা অঙ্কের গয়না কিনবে বলে তাঁরা শংকরবাবুকে জানিয়েছিল। এভাবেই মুখচেনা হয়ে যাওয়ায় ঘটনায় দিন তাঁরা দুপুর তিনটের সময়ও আসলে দোকান খুলে রাখা হয়েছিল। এই কারণে বিগত দিনেরও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনার সময়েরও একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে ইতিমধ্যেই পাঁচজন দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের ধরতে ইতিমধ্যেই বারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ চারটি টিমে তল্লাশি শুরু করেছে।
দুষ্কৃতীদের সঙ্গে ভিন্ন রাজ্যের যোগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। তাই ঝাড়খন্ড এবং ওড়িশাতে ডাকাত দলের খোঁজ চালানো হচ্ছে। পরিবারের তরফে বরানগর থানায় খুন-সহ ১৫কেজি সোনার গয়না ডাকাতির অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। এদিকে, ভরদুপুরে বরানগর পুরসভায় ২০নম্বর ওয়ার্ডের শম্ভুনাথ দাস লেনের সোনাপট্টির নামে ৯ নম্বর দোকান ‘সরস্বতী চেন এন্ড অর্নামেন্টসে’ দুঃসাহসিক ডাকাতি ও নৃশংস খুনের ঘটনায় আতঙ্ক এখনও রয়েছে ব্যবসায়ী মহলে। অবিলম্বে তাঁরা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারির দাবি করার পাশাপাশি সোনাপট্টিতে পুলিশ পিকেটিংয়ের দাবি তুলেছেন। রবিবার শম্ভুনাথ দাস লেনের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ।